মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনয়নের মশালডাঙ্গী গ্রামে বাদলা ভাইরাস রোগে মারা যাচ্ছে গবাদিপশু গরু।
এমন ঘটনায় দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কে দিন পার করছেন গ্রামের মানুষ। বাদলা ভাইরাস রোগে সীমান্ত ঘেঁষা মশালডাঙ্গী গ্রাম ও পাশ্ববর্তী ৪ নং — কলোনীতে গত দুই মাসে ২০ জন কৃষকের অর্ধশত গরু মারা গেছে। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১৯টি গরু।
সরেজমিনে গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাদলা ভাইরাস এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৬-১০ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় করতে পারার কারণে কোন ধরণের চিকিৎসা কাজে আসছে না। দুই দিনে দুটি গরু মারা যাওয়া কৃষক আব্দুল বলেন, অনেক কষ্ট করে গরু লালন পালন করি। গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেব ভেবেছিলাম কিন্তু সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল। প্রথমে গরুর শরীর গরম হয়ে যায়, এরপরে পেট ফুলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এমন করে ৬-১০ ঘন্টা পর মারা যায় গরু। এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়ে গেল আমার। আরও দুটা গরু আছে সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। আইয়ুব নামে আরেক কৃষক বলেন, সীমান্ত ঘেঁষা এই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ গরু পালন ও কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল।
গরু বিক্রি করে কৃষি কাজ, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদি সকল খরচ বহন করি। সীমান্তে চারণ ভূমি থাকায় গরু পালনে বেশ সুবিধা রয়েছে আমাদের। দুই গ্রামে অন্তত দেড় হাজার গরু পালছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত দুই মাসে অর্ধশত গরু মারা গেছে দুটি গ্রামে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পানিসম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরেজমিনে সেই দুটি গ্রামে গিয়েছিলাম। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের বাদলা ভাইরাস মনে হয়েছে।
এ ছাড়াও সীমান্তে লালন পালন হওয়ায় এটি ভারত থেকে আসা কোন ভাইরাস হতে পারে। আমরা কিছু গরুকে বাদলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান করেছি।
আর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আমরা চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে।