ঢাকাশুক্রবার , ৫ এপ্রিল ২০২৪
  1. অন্যান্য
  2. অভিযোগ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন বিচার
  5. আওয়ামী লীগ
  6. আগুন
  7. আটক
  8. আন্তর্জাতিক
  9. আবহাওয়া
  10. আমাদের পরিবার
  11. আরো
  12. ইতিহাস ও ঐতিহাসিক
  13. ইসলাম
  14. ইসলামী জীবন
  15. এশিয়া
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাথায় রোদের তাপ,চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ উপকূলের দারিদ্র্য পরিবারের

50
admin
এপ্রিল ৫, ২০২৪ ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

আলফাত হোসেন সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ

পবিত্র মাহে রমজানে মাথায় রোদের তাপ, চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ উপকূলের দারিদ্র্য পরিবারগুলোর। ‘ঈদ করব কীভাবে? ঈদ তো তাদের, যারা বড়লোক ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আর এই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে ধনী দরিদ্র সবাই যার যার মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর,ছোট বড় ধনী দরিদ্র সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন ঈদের কেনা কাটায়। ঈদকে সামনে রেখে রাজধানী সহ দেশের সর্বত্রই জমে উঠেছে কেনাকাটা। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে ধনীদের পাশাপাশি নিম্ন আয়ের লোকজনরাও চায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে এই ঈদে আনন্দ উপভোগ করতে,শত কষ্টের মাঝেও তারা চায় ঘরে ভাল খাবার খেতে, নতুন পোশাক পড়ে ঘুরে বেড়ানো সহ আনন্দ উপভোগ করতে।

ক্রেতাদের ভিড়ে দেশের ভালো মানের মার্কেটে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ভেতরে শুধু নয়, বাইরের ফুটপাতেও জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা,পথের কোথাও কোনো ফাঁকা জায়গা নেই। সবকিছুই স্বাভাবিক চলছে,পছন্দের কাপড় কিনতে ছুটছেন ক্রেতারা। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছন্দপতন এসেছে। দৈনন্দিন বাজার নিয়ে কড়ায়-গন্ডায় হিসেব করে অগ্রসর হতে হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষের। এরপরও আয়-ব্যয়ের হিসাব মিলাতে ব্যর্থ হচ্ছেন অনেকেই। দৈনন্দিন বাজার খরচের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছেন অসংখ্য স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের উপকূলীয় ইউনিয়ন গুলোতে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় নিদারুণ অসহায় অবস্থায় অনেকেই দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে নতুন কাপড় পাওয়ার আশায় বসে বসে অপেক্ষা করেছেন। এসব সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা আশায় আছেন— হয়তো কোনো মানিবক ব্যক্তি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নের জয়াখালী মোড়ে দেখা হয় এক বৃদ্ধ ভ্যান চালকের সাথে,বয়স ৬৫ ছুঁই- ছুঁই।

তীব্র রোদের মাঝে রমজানে রোজা থেকে চালাচ্ছে ভ্যান গাড়ী। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে হতাশা যেন ততই বাড়ছে, তার চোখ-মুখে দেখা যাচ্ছে হতাশার ছাপ। কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে, ঈদে কী কিনছেন? ঈদের বাজার করা হলো কি? সে বলে উঠলো ঈদ আমাদের জন্য না! গরিবেরে আবার কীসের ঈদ। সকাল থেকে রাস্তায় এসে ২০০ টাকাও ভাড়া মারতে পারি না কী করে চলবো। ছেলে মেয়েদের জন্য তো কিছু কেনা কাটার প্রয়োজন তাও করতে পারিনি,কী করবো? তীব্র রোদের ভিতরে আর কতো? জানি না ছেলে মেয়েদেরকে নতুনা জামা কাপড় কিনে দিতে পারি কী না। কৈখালী কালিন্দী পাড়ার একজন বিধবা মহিলা বলেন, ‘ঈদ করব কিভাবে? ঈদ তো তাদের, যারা বড়লোক। আমাদের তো বেঁচে থাকাই কঠিন। সংসারের খরচ চালাতেই জীবন শেষ।’

তিনি বলেন, ‘নিজের জন্য এখনো কিছু কিনতে পারিনি। আমি কিছুই নেবো না,ঈদ তো ছেলেমেয়েদের। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টাই মাঠে ঘাটে রাস্তায় কাটে আমার,শরীর ঘামে ভেজে, রোদে শুকায়, আমার আবার কীসের ঈদ? ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় দিতে পারলেই আমি খুশি,ওদের খুশিই আমার ঈদ।

এদিকে ঈদ পোশাক আর সেমাই কিনতে দুশ্চিন্তায় আছেন সুন্দরবনের জেলে বাওয়ালী,আর অসহায় দিনমজুর, মানুষেরা একদিকে নদীতে মাছ কম থাকায় ধরতে পারছে না মাছ,অন্যদিকে উপকূলীয় অঞ্চলে কর্মসংস্থান কম থাকায় হচ্ছে না আয়, হাতে তেমন টাকা পয়সা নেই। ঈদে ছেলে মেয়েরা নতুন জামা কাপড় ও সেমাই খেতে পারবে তো এ চিন্তাতেই অনেক পরিবার অস্থির হয়ে আছেন।

তবে চান ঈদে আর যাই হোক পরিবারের জন্য সেমাই চিনি কিনতে চান তিনি,নিম্ম ও মধ্যবিত্ত জীবনে সাধও সাধ্যের মধ্যে ব্যবধান গুছানো খুবই দুঃসাধ্য,তবুও তারা সাধ্যের মধ্যে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ছুটছেন। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। তবে দেশে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতারা ঈদ বাজারে এসে একটু চিন্তা ভাবনা করেই কেনাকাটা করছেন।

তবে ঈদের আগ মুহূর্তে কেনাবেচা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। বছরের প্রধান উৎসাহ মাহে রমজানের শেষে আনন্দের ঈদকে বরণ করার জন্য ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে কারোরই আগ্রহ উৎসাহের কমতি থাকে না। স্বল্প আয়ের লোকদের মনে থাকে নানা দুশ্চিন্তা। তারপরও ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চেষ্টার ত্রুটি নেই। তারা সাধ্যনুযায়ী চেষ্টা করছেন পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটাতে। আর অপেক্ষা করছে সরকারি-বেসরকারি ও মানবিক মানুষের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার।

এই সাইটে নিজম্ব খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।