নিজস্ব প্রতিবেদক
শিরোনামে করা প্রশ্নের উত্তরে কেউ মজা করেন, কেউবা আবার দাবি করেন পুরুষের ভেতর আসলে নারী কী খোঁজে, তারা নিজেরাই জানেন না। কিন্তু সত্যিটা হলো, এর কোনো একক উত্তর নেই। একেক নারীর ক্ষেত্রে একেক ধরনের খোঁজা। তবে হ্যাঁ, পুরুষের মধ্যে এমন কিছু বিশেষ গুণ আছে, যেগুলো সাধারণত নারীরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন বা খোঁজেন।
কী সেই গুণ? চলুন জেনে নিই।
সততা, বিশ্বস্ততা: এটা কেবল নারী-পুরুষ হিসেবে নয়, যেকোনো মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ নিঃসন্দেহে সততা। আর কেউ-ই ভালোবাসার নামে প্রতারিত হতে চান না। কাজেই নারীর মনে ঠাঁই পেতে হলে আপনাকে প্রতিটি ব্যাপারে সৎ হতে হবে। বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।
একটুখানি সেন্স অব হিউমার: জানি, কথাটা আপনি আগেও শুনেছেন। নারীকে যে পুরুষ হাসাতে পারেন, তার সিঙ্গেল থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, এই গুণকে মেয়েরা সত্যিকার অর্থেই অনেক বেশি পছন্দ করেন। না, এর মানে আপনাকে গোপাল ভাঁড় হতে হবে না। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে মজা করা, হাসানোর দক্ষতা একটা বড় গুণ।
আত্মবিশ্বাস: সামাজিক, মানসিক—সব ধরনের আত্মবিশ্বাসই নারীর পছন্দের তালিকার শীর্ষে। আপনি স্পষ্টভাবে নিজের অবস্থান জানান দিতে পারেন, সুন্দর করে কথা বলতে পারেন বা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন, অনেক নারীর কাছে এর চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় আর কিছু নেই!
বুদ্ধিমত্তা: না, না। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নারীর মন পেতে হলে আপনার আইনস্টাইন হতে হবে না। শুধু পরিস্থিতি, ঘটনা বুঝে সেই অনুযায়ী আচরণ করতে পারলেই চলবে। শুধু নারীকে আকর্ষণের জন্য নয়, এই বুদ্ধিমত্তা আপনার নিজের জন্যও খুবই জরুরি।
জীবনের লক্ষ্য থাকা: নারীরা ‘ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেড’ পুরুষকে পছন্দ করে। ছোটবেলায় লেখা ‘এইম ইন লাইফ’ রচনার মতো মিথ্যা লক্ষ্য হলে হবে না। বরং আপনি সত্যি সত্যিই একটা কিছু হতে চান এবং সেই অনুসারে পরিশ্রম করতে পারেন, বিষয়টা অনেকের কাছেই অনেক প্রিয়। কাজেই, আজকেই খাতা–কলম নিয়ে ভাবতে বসে যান, আর ১০ বছর পর নিজেকে আপনি কোথায় দেখতে চান?
অর্থনৈতিক নিরাপত্তা: অনেকেই মনে করেন, পুরুষের ভালো চাকরি, টাকাপয়সা—এগুলো নারীকে টানে। এগুলো কাকে টানে না বলেন? প্রত্যেক মানুষই জীবনে নিরাপত্তা চান। আর সেই নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। ধনী হতে কে না চান? এই পৃথিবীতে কেউ দরিদ্র থাকতে চান? ধনী হওয়ার অন্যতম সহজ উপায় ধনী কাউকে বিয়ে করে ফেলা। তবে বিশেষ করে বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক নারী–ই সংসারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আর সব শ্রেণির ভেতরেই নারীর অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত হওয়ার হার বাড়ছে। অস্কারজয়ী হলিউড তারকা অ্যান হ্যাথওয়ের মতে, ধনী পুরুষ কেবল অলস নারীদের আকর্ষণ করে! পরিশ্রমী নারীর জন্য পুরুষ যদি ধনী হন, সেটা একটা ‘বোনাস’। পুরুষকে ধনী হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই! তবে পুরুষকে অর্থনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
সম্মান, দয়া, মায়া, সহানুভূতি, পোষা প্রাণীর প্রতি আবেগ: ছোট্ট পরিসরে চালানো একটা গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ছেলের পোষা প্রাণী থাকে, মেয়েরা তাঁদের প্রতি আকৃষ্ট হন বেশি। দয়া, মায়া, সহানুভূতিসম্পন্ন পুরুষেরাই নারীকে বেশি আকর্ষণ করেন। অন্য নারীদের সম্মান করা, স্বেচ্ছাসেবামূলক যেকোনো কাজ—এই দুই বিষয় নারীদের অনেক পছন্দ। কাজেই আপনি যদি নারীদের সম্মান করেন, তাঁদের জন্য সহমর্মী হন আর মানবসেবায় নিজেকে কিছুটা হলেও উৎসর্গ করেন, তাহলে সম্ভাবনা আছে, নারীদের ভেতরেও আপনি অনেক জনপ্রিয়তা পাবেন। বলিউড তারকা শাহরুখ খান এর আদর্শ উদাহরণ।
এসবের বাইরেও মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থাকে। তবে ওপরের গুণগুলো শুধু মেয়েদের কাছেই পছন্দের, তা–ই নয়। বরং এসব গুণ মানুষ হিসেবে আপনাকে পরিপূর্ণ করে তুলতে সাহায্য করে। আর সঙ্গী হিসেবে একজন নারী তো একজন ভালো মানুষকেই সবার আগে চাইবেন, তাই না?