মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার “একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র” প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। সমাজসেবা কার্যালয়ের যাবতীয় নিয়ম-কানুন মানার কারনে একাধিকবার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসন, জেলা-উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শনে সফল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায় প্রতিষ্ঠানটি।
তার পরও স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য সহ আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির বিল বন্ধ রয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো: আমিরুল ইসলাম জানান, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আরাজী ঝাড়গাঁও এলাকায় বে-সরকারী সংস্থা হিসেবে গত ২০১৪ সালের ৩১ আগষ্ট ঠাক-২৯৬/২০১৪ নং– নিবন্ধন পায়।
এর পর থেকেই ঠাকুরগাঁও জেলার সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়ম মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির বিল ধরার ব্যাপারে বেশ কয়েকবার তৎকালীন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা-উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে অত্র প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে বলে, সুপারিশ সহ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিল ধরা প্রক্রিয়াধীন ছিল।
কিন্তু ২০১৮ সালের ১ জুন তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর, একটি অভিযোগপত্র প্রেরন করেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মো: আব্দুল খালেক সহ ১০ জন। আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়ে একতা প্রতিবন্ধী স্কুলটি বি.এন.পি জামাত দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বিধায় বেতন ভাতা বন্ধ করার জন্য সুপারিশ করা হয়।
আবেদনপত্রে বেতন ভাতা বন্ধ করার জন্য সুপারিশ করেন তৎকালীন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামীলীগের সহ -সভাপতি মরহুম এ্যাড. মকবুল হোসেন বাবু, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার, ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: একরামুল হক একরাম।
এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে নিজ উদ্যোগে ও বিভিন্ন সরকারী-বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় “একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র”টি কোনমতে চলছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মানবেতন জীবন-যাপন করছেন তারা।
এ ব্যাপারে খুবই জরুরী ভিত্তিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়।