আসলাম খান, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ
জীবিকার তাগিদে মানুষ বেছে নেয় নানা পেশা, সেটি ছোট কিংবা বড় হোক, যার যেমন সামর্থ তার তেমন কর্ম। এমনই একটি পেশা বেছে নিয়েছেন রংপুর জেলার কাউনিয়া সোনাতন গ্রামের অসহায় রানা মিয়া (৩৫)। তিনি ৮ বছর ধরে বাদাম বিক্রি করছেন। আর এই সামান্য আয় দিয়েই দুই ছেলে কে পড়ালেখা করাচ্ছেন। রানা মিয়া বলছেন, দুই ছেলে কে ঠিক ঠাক পড়া লেখা করাতে পারলে একটু শান্তি পেতাম। সরকারী পূর্নদনার ভীষন প্রয়োজন।
মীরবাগ বাজার ও বাসস্টানের পাশে দেখা যায়, গলায় বাদামের ডালা ঝুলিয়ে ৩০/৪০ কিলো পায়ে হেটে হেটে বাদাম বিক্রি করছেন রানা মিয়া। সংসারে তার বাড়তি কোনো আয় নেই, নেই কোনো আবাদি জমি। প্রতিদিন সকাল হলেই খেয়ে-না খেয়ে বাদামের ডালা গলায় ঝুলিয়ে রংপুর শহরমুখী হন তিনি। ৫ থেকে ৬ কেজি বাদাম তার স্ত্রীসহ নিজেই ভেজে গরম গরম নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন। অলিগলি ঘুরে বিক্রি করেন। এতে তার লাভ হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। মীরবাগে তিনি পরিচিত মুখ, তার ভাজা বাদামের স্বাদ সবার মুখে মুখে।
একজন ক্রেতা আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, এই অসহায় ভাইয়ের বাদাম আমি প্রতিদিন কিনে খাই। তার বাদাম ভাজাটা ভালো এবং কড়া হয়। ১০০ গ্রামের দাম ৩০ টাকা, বাদামের সাথে সুস্বাদু লবণ দেন, খেতে ভারি মজা।
বাদাম ব্যবসায়ী রানা মিয়া জনবাণী কে বলেন, বাদামের লাভ দিয়ে আমার সংসার চলে, অন্য কোনো কর্ম জানি না। ৮ বছর ধরে মীরবাগে ব্যবসা করে আসছি, এই ব্যবসায় আমার,দুই ছেলে কে লেখাপড়া শিখাই, সংসার চালাই সরকারের কাছ থেকে কিছু সহযোগীতা পেলে আমার আর কোনো অভাব থাকবে না। আজ আমার বয়স (৩৫)হয়ে গেছে, সরকারী কোনো সয়হাতা পেলে,অনেক উপকার হতো।
এ বিষয়ে কাউনিয়া উপজেলার ২ নং হারাগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রাজু মিয়া বলেন, আমার ইউনিয়নের সোনাতন গ্রামের বাদাম বিক্রেতা রানা মিয়া কে ব্যক্তিগতভাবে চিনি এবং জানি। তাকে মাসে ৩০ কেজি ভিজিডি’র চাল দেওয়া ব্যবস্তা করবো ইনশাল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, রানা মিয়ার এখনো ৬৫ বছর বয়স হয়নি, তবে ৬৫ বছর হলে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে। আমার ইউনিয়নে প্রায় শতভাগ বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীকে ভাতার কার্ডের আওতায় আনা হয়েছে।