আব্দুর রাজ্জাক স্টাফ রিপোর্টার:
কুড়িগ্রাম সদর থানা এলাকার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টার দিকে ভিকটিম উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের তনুরা হাজিপাড়া গ্রামের মোঃ ইউনুছ আলী (৩৬) মটর সাইকেল নিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন আবাসিক হোটেল অর্নব প্যালেস এর পশ্চিম পার্শ্বে ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স বীমা অফিসের সামনে পৌছালে চার জন ব্যক্তি ভিকটিমকে থামার সংকেত দেয়।
ভিকটিম স্বাভাবিক ভাবে মটর সাইকেল থামিয়ে তাদের কোমড়ে আইডি কার্ড ঝোলা অবস্থায় দেখে। তারা ডিবি বলে পরিচয় দিয়ে বাদীর মটর সাইকেলটি সাইড করতে বলে। আসামীদের কোমড়ে আইডি দেখে তারা ডিবি পুলিশ বলে ভিকটিম বিশ্বাস করে এবং মোটরসাইকেলটি সাইড করলে আসামীগন ভিকটিমের মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেয়। আসামীরা ভিকটিমের দেহ তল্লাশী করে ভিকটিমের কাছে থাকা চেকবইয়ের পাতা ও মোবাইল ফোন বাহির করে নেয়। ভিকটিমের মোটরসাইকেলের চাবি, চেকর পাতা ও মোবাইল নেয়ার কারণ জানতে চাইলে আসামীগন ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে।
ভিকটিম ভীত হয়ে চুপ থাকলে আসামীগনের মধ্যে একজন আসামী মটরসাইকেল, চেকের পাতা ও মোবাইল নিয়ে রংপুর গামী রাস্তা দিকে চলে যায় এবং অন্যান্য আসামীগন ভিকটিমকে কুড়িগ্রাম থানায় আসার কথা বলে তাদের সাথে থাকা গাড়িতে উঠে রংপুরগামী রাস্তার দিকে চলে যায়। অতঃপর ভিকটিম কুড়িগ্রাম থানায় উপস্থিত হয়ে দেখতে পায় যে, থানায় তার মটরসাইকেল নাই এবং আসামীদের দৈহিক বর্ণনা দিয়ে জানতে পারে যে, উক্তরুপ কোন আসামী থানা ও ডিবি অফিসে চাকুরি করে না। পরবর্তীতে বাদীর এন্ড্রোয়েড মোবাইলে রক্ষিত নম্বরে কল করে আসামীগন বাদীকে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা নিয়ে রংপুর কোতয়ালী থানা এলাকায় ডাকে।
আসামীগন রংপুর কোতয়ালী থানা এলাকায় অবস্থান করছে জেনে বাদী উক্ত থানায় উপস্থিত হয়ে থানা পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে অবহিত করে এবং আসামীদের খোঁজ সন্ধান করতে থাকে। এদিকে কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ উক্ত সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার অনুসন্ধান করতে থাকে। পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম থানার একটি আভিযানিক টিম এসআই নিরস্ত্র মোঃ নওসাদ আলীর নেতৃত্বে নিরলসভাবে টানা ০২ দিন অভিযান পরিচালনা করে গত ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ রাত আনুমানিক ০১.৩০ মিনিটের দিকে জামালপুর সদর থানাধীন পশ্চিম ফুলবাড়ীয়া (কদমতলা) এলাকা থেকে উক্ত ঘটনার মূলহোতা গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর থানার উত্তরহাট বামুনী এলাকার মোঃ নাজমুল ইসলাম (২৮) ও বগুড়া জেলার কাহালু থানার কৈগাড়ী এলাকার মোঃ ইমরান হোসেন (২৩) দ্বয়কে ভিকটিমের লুন্ঠিত মোটর সাইকেলটি উদ্ধার পুর্বক গ্রেফতার করে।
সেই সাথে তাদের হেফাজত থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি আইডি কার্ড, সেনাবাহিনীর একটি শীতের জ্যাকেট ও একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন জব্দ করে কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ। পুলিশের উক্ত চৌকশ দলটি এই এদের গ্রেফতার করতে রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও জামালপুরে অভিযান পরিচালনা করে। কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব মোঃ রুহুল আমীন বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জেলায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয় প্রদান করে অপরাধ করে আসছিলো। কুড়িগ্রাম জেলায় এই ঘটনা ঘটিয়ে জামালপুর জেলায় আত্মগোপনে ছিল।
কিন্তু কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিমের টানা ২ দিনের নিরলস অভিযানে ছিনতাই হওয়া মামালালসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হয় উক্ত ছিনতাইকারী। এই গ্রুপের সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা এই বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। জাড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনতে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ বদ্ধপরিকর।