মোঃ বুলবুল ইসলাম,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের খানসামায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নৌকা মার্কার প্রচারণা কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-মৎস্যজীবি লীগের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ৫নং ভাবকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বুধবার ফেসবুক বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে এটি জানাজানি হয়।
জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব সুমন সঙ্গে ভাবকী ইউনিয়ন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার ও মৎস্যজীবি লীগের আহ্বায়ক আশরাফুলের মধ্য সংঘর্ষ হয়। পূর্বের বিরোধ থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। নৌকার প্রচারণা করে দলীয় কার্যালয়ে মিটিং চলাকালে প্রথমে বাকবিতন্ডা ও পরবর্তীতে মারপিটের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিজেদের মধ্যেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও বিব্রত।
মারধরের শিকার খানসামা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব সুমনের কাছে জানতে চাইলে। তিনি বলেন,’আমরা সবাই যে যার মত করে সবাই নৌকার প্রচারণা চালিয়েছি। প্রচারণা কেন্দ্র করে মৎস্যজীবি লীগের আশরাফুল ভাবকী ইউনিয়নের সভাপতিসহ সকলকে অপমান করে গেছে। সে এসে প্রচারণার হিসেবে নিকাশ চাইছে। এরপর আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি ভরা মিটিংয়ে কিভাবে সিনিয়র নেতাদের অপমান করো? এই দুঃসাহস তোমাকে কে দিয়েছে? এটা তুমি আলোচনার মাধ্যমে করতে পারো। খারাপ ব্যবহার করা তোমার ঠিক হয়নি। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে আক্রমণ করে। তার মামা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ারসহ আরও দলবল নিয়ে আমার ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির উপর অতর্কিত হামলা করে। এরপর কার্যালয়ের সকলকে বের করে দিয়ে আমি ও আমার কর্মীদের কার্যালয়ে আটকিয়ে রেখে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাকে এমন একটি আঘাত করে আমি ছিটকে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পাই। আমার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আসলে তাদেরকেও বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমাকে বিএনপির লোকজনসহ আমাকে মারলো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসলে তাদেরকেও মারে। এরপর প্রশাসন আসে এবং আমাকে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। আমি সবচেয়ে বেশি আঘাত পাই তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে আছি।’
এ বিষয়ে ভাবকী ইউনিয়ন মৎস্যজীবি লীগের আহ্বায়ক আশরাফুল বলেন, ‘সুমন নেশাখোর গ্রুপ নিয়ে এসে আমাকে একা পেয়ে চার্জ করে, আক্রমণ করে প্রথমে আমার শার্ট ছিড়ে দেয়, এরপর চশমা ভেঙে দেয়, আমার অফিসের আইডি কার্ড ভেঙে দেয়। তারা গাঁজা খেয়ে আমাকে মারধর করে। আমি মারধরের শিকার হলে আমার বড় ভাই তাকে চড় থাপ্পড় মারে। কেননা আমি মার খেয়েছি। ও নাটক করে হাসপাতালে শুয়ে আছে। এগুলা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এ বিষয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয় নি।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাকেশ গুহ বলেন, ‘মৎস্যজীবি লীগের নেতা আশরাফুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের কটাক্ষ করে কথা বললে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব সুমন প্রতিবাদ জানালে হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। এতে আশরাফুল সুমনের উপর অতর্কিত হামলা করে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে দেখতে যাই। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ অবগত বিষয়টি অবগত আছেন। নির্বাচনী প্রচারণা বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। উপজেলা আওয়ামী লীগসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা যে সিদ্ধান্ত নিবে আমরা ছাত্রলীগ মেনে নিবে। আমরা সুমনের সাথে আছি। এ ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।’
আরো পড়ুন, দৈনিক তালাশ টাইমস্ এ
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্যজীবি লীগের আহ্বায়ক সুশান্ত মহন্ত বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। পরবর্তীতে জানাবো।’এ ব্যাপারে ৫নং ভাবকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সামাদকে একাধিকবার ফোন করলে। ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খানসামা থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মন্ডল বলেন, এ বিষয়ে এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।