রিফাত হোসেন লালমনিরহাট
লালমনিরহাটে কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন থমকে গেছে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশার কারনে দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলায়ও সড়কে যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এতে করে এ অঞ্চলের ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে নিম্নআয়ের মানুষ।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, উত্তরের হিমালয়ের পাদদেশের অবস্থিত লালমনিরহাটে। তাই এই অঞ্চলে উত্তরের হিমেল বায়ু আবারও সক্রিয় হওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে।
এছাড়াও ১৭ অথবা ১৮ জানুয়ারির দিকে বৃষ্টি হতে পারে। ঠান্ডার প্রকোপের কারণে এ অঞ্চলে বাড়ছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। অন্যদিকে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় কর্মজীবী মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে শৈত্য প্রবাহের ঠান্ডা বাতাসে অসুস্থ হয়ে পড়ছে সব প্রাণী।
- আরও পড়ুন:খাগড়াছড়িতে বাড়ছে শীতের প্রকোপ
মানুষ, জীব জন্তুসহ ফসলের ক্ষেতেও এর প্রভাব পড়েছে। নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখি এবং ফসলের ক্ষেত। ঘন কুয়াশায় ফসলের ক্ষেতেও নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। কৃষকরা আলুসহ সব সবজি ক্ষেতে এবং আমনের বীজতলায় শীত সহনীয় বিভিন্ন কীটনাশক স্প্রে করছেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহের কারনে তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন খামারিসহ কৃষকরা।
কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতী গ্রামের কৃষক মাফিজুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন থেকে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কাজ-কর্ম বন্ধ রয়েছে। তিস্তার বাসিন্দা রেজ্জকুল আলী বলেন, ঘন কুয়াশার সাথে বাতাস বইছে। শিরশির হাওয়াতে তিস্তার চরে যাওয়া খুবেই কষ্টকর। তাছাড়া সূর্যের দেখা নেই চারদিন থেকে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান, জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত নিউমোনিয়া আক্রান্ত বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছেন। লালমনিরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ শীতজনিত রোগীদের সেবা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেছেন, শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসুচী চলমান রয়েছে। শীতবন্ত্র চাহিদা আরো দেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আরো বরাদ্দ আসবে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি শীতার্থ মানুষের পাশে যেতে।