আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ঘনকুয়াশা আর কনকনে শীতের সঙ্গে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। চলমান শৈত্যপ্রবাহে নাকাল ফুলবাড়ী উপজেলার মানুষ। সন্ধ্যা থেকে রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা।
সেই সাথে বইছে হিমশীতল বাতাস। হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়ক ও মহাসড়কে ধীর গতিতে চলছে ছোটবড় সব ধরণের যানবাহন। শীতের কষ্টে পড়েছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও। দিনভর ঠান্ডা বাতাসে কাবু হয়ে পড়ছে জনজীবন। তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগবালাই ও ডায়রিয়ার প্রকোপ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় বাড়ছে ঠান্ডায় আক্রান্ত রোগীদের। এ অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলো ঘনকুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় নাকাল হয়ে পড়েছে। গাবাদিপশু রক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিসহ কৃষকরা।
দিনাজপুর জেলায় শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আদ্রতা ৯৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ০১ নটস রেকর্ড করা হয়েছে। এ আবহাওয়া আরও দু-একদিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে দিনাজপুর আবহাওয়া দপ্তর।
- আরও পড়ুন:খাগড়াছড়িতে বাড়ছে শীতের প্রকোপ
এদিকে, কনকনে শীতে বিপর্যন্ত জনজীবন। শীতের সকালে ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও বয়স্ক মানুষ।
ফুলবাড়ী পৌরশহরের বাসস্ট্যান্ডে রিকশাভ্যান চালক রাজু আহম্মেদ ও ইজিবাইক চালক আব্দুল খালেক বলেন, ঠান্ডা কমছে না, আরো বাড়ছে। গরিব মানুষের যত জ্বালা। ঠান্ডা সহ্য হয় না। বাড়ীত বসে থাকাও যাচ্ছে না। গরিব মানুষ বাড়ীত বসে থাকলে খাবার কে দিবে। ঠান্ডার মধ্যেই রাস্তায় বেরিয়েছি, যা আয় হয়, গাড়ীর জমা দিয়ে যা কিছু আয় থাকবে তা দিয়ে বাজার করে বাড়ী ফিরবেন। ঠান্ডার জন্য আয় কমে যাওয়ায় দিন চলা কঠিন হয়ে গেছে। হিমশীতল বাতাস আর ঠান্ডার জন্য কেউ গাড়ীতে উঠতে চাচ্ছেন না।
কাঁটাবাড়ী এলাকার বৃদ্ধ শরিফ উদ্দিন বলেন, যে শীত পড়ছে তাতে আমাদের মতো বৃদ্ধদের জন্য খুব কষ্ট হয়ে গেছে। বাইরে চলাফেরাই করতে পারছি না।
ফুলবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী জব্বার আলী ও রেজাউল আলমের সাথে কথা হলে তারা জানান, ৭-৮ দিন থেকে ঠান্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে লোকজনের সমাগম অনেক কমে গেছে।
এজন্য দোকানের বেচাবিক্রিও অনেক কমে গেছে। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ী থেকে বের হচ্ছে না।
উপজেলা ত্রাণ ও প্রকল্প কর্মকর্তা মো. শফিউল ইসলাম বলেন, উপজেলার অসহায় ও দুস্থদের শীত নিবারণের জন্য ৪ হাজার ৭৬৪ টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান থেকে জেলাজুড়ে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শনিবার (২০ জানুয়ারি) দিনাজপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসে আদ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ছিল ০১ নটস।