স্টাফ রিপোর্টার
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের মাছুরী এলাকায় একটি অসহায় পরিবার তাদের পৈত্রিক জমি জোরপূর্বক দখলের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মোঃ ইউনুস বিশ্বাস (৫৮) মানিকগঞ্জ থানায় একই এলাকার পাঁচজন সহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে ইউনুস বিশ্বাস জানান, তার পিতা মৃত আঃ জব্বার ১৯৭৫ সালে মাছুরী মৌজার ৩০২ নং খতিয়ানের ১৬ নং দাগে ১৬০ শতাংশ জমির মধ্যে ৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করে ভোগদখল করছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর বিবাদী মোঃ সোহেল ফকির (৪৬), মোঃ টুলু ফকির (৬০), মোঃ বাদল ফকির (৫৫), মোঃ জুয়েল ফকির (৫৫) ও মোঃ বিন্টু ফকির (৬৫) সহ আরো কয়েকজন জোরপূর্বকভাবে তার জমি দখল করে নিয়েছে।
ইউনুস বিশ্বাস আরও অভিযোগ করেন, ৪নং বিবাদী জুয়েল ফকিরের পিতা মৃত আঃ হাকিম আটিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের জমিতে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেন। সে সময় তিনি অসহায় হওয়ায় প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি। চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পরও বর্তমান বিবাদীরা তাদের প্রভাব খাটিয়ে জমিটি দখলে রেখেছে এবং জমিতে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে। এমনকি জমিতে গেলে তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী জানান, বিবাদীরা ইতিপূর্বে তাদের জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে নিয়েছে। আবারো গত ২৭ মার্চ (২০২৫) সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে বিবাদীরা দলবদ্ধভাবে ভেকু নিয়ে এসে পুনরায় মাটি কাটা শুরু করে। এমনকি গত ৮ এপ্রিল সূর্য ডুবলেই রাতের আঁধারে তাদের ভূমি ধ্বংসের মহাযজ্ঞ শুরু করে ।
ইউনুস বিশ্বাস জানান, বিবাদীরা স্থানীয়ভাবে ‘বলিয়ান, লাঠিয়ান ও ভূমি দস্যু’ হিসেবে পরিচিত এবং তিনি নিরীহ ও অসহায় হওয়ায় তাদের কোনো প্রতিবাদ করতে পারেননি।
থানায় অভিযোগ দায়েরের পর ইউনুস বিশ্বাস প্রশাসনের কাছে তার পৈত্রিক জমি উদ্ধার এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাটি খননকারী ভূমিদস্যু মোঃ সোহেল ফকিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, ” আমার জায়গা আমি কাটবো, কুয়া খুতবো, যা ইচ্ছা তাই করবো, এখানে কার বাপের কি ? এমনকি উপর মহল থেকে আমি মাটি কাটার অনুমতিও নিয়েছি । কেউ আসলে সোজা মাটিতে পুঁতে ফেলবো” ।
এ বিষয়ে আটিগ্রাম ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী মোঃ আঃ সত্তার হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, “ঈদের আগে এরকম অভিযোগ আমার কাছে এসেছিল তারই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত নিয়ে মাটিকাটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম । আবারো যেহেতু মাটি কাটছে আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব । যেহেতু সে মাটি কাটার কোন ধরনের অনুমতি পাইনি, দুঃখজনক ভাবে সে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে । ”
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমান উল্লাহ বলেন, অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, প্রভাবশালী কর্তৃক নিরীহ পরিবারের জমি দখলের এই ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।
Leave a Reply