মিজানুর রহমানঃ
রাত পোহালেই লালমনিরহাট জেলা পরিষদ উপনির্বাচন,চেয়ারম্যান পদে শেষ মুহুর্ত্যে নির্বাচনী প্রচারনা জমে উঠেছে,নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে জটিল হচ্ছে সমীকরন,দল গত মনোনয়ন না দেওয়ায় দলীয় একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন,এতে দলের ভিতরে এবং বাহিরে রাজনিতীর দুরত্ব প্রকট হচ্ছে।
উপনির্বাচন কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মাঠ এতটাই জটিল হয়েছে যে,পরিবারের বড় কর্তা যার দিকে ইশারা করছেন ছোট কর্তা তার উল্টা দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছেন,এ যেনো এক ঘর মে দো পীর,যার প্রভাব পড়তে পারে ভোটের ফলাফলে, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে ফলাফলে চমক অসতে পারে।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদের উপনির্বাচন ০৩ রা এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ একক প্রার্থী দিতে পারেনি,লালমনিরহাট সদর থেকে তিন জন এবং হাতিবান্ধা উপজেলা থেকে একজন প্রার্থী এবং দলের বাহিরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একজন
সহ ০৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি নজরুল হক পাটোয়ারী ভোলা,কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য ও সাবেক সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডঃসফুরা বেগম রুমী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক অ্যাডঃ আশরাফ হোসেন বাদল,জেলা আওয়ামিলীগের সদস্য ও হাতিবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুবক্কর সিদ্দিক শ্যামল,এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মমতাজ আলী শান্ত উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে শেষ মুহুর্ত্যের রাজনৈতিক সমীকরন ততই ধোঁয়াশা হচ্ছে, মাঠের লড়াইয়ে ভোট যুদ্ধের মুল আলোচনায় রয়েছেন আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল এবং অ্যাডঃ সফুরা বেগম রুমী,ক্ষমতাসীন দলের ০৩ সংসদ সদস্য প্রকাশ্যে অ্যাডঃ সফুরা বেগম রুমী কে সমর্থন দিয়ে ভোটের মাঠে প্রচারনা চালাচ্ছেন।
প্রকাশ্যে অ্যাডঃ সফুরা বেগম রুমিকে সমর্থন দিলেও দলীয় একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোটাররা বিভিন্ন মুখী,এর বাহিরে আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল লালমনিরহাট ০১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের ব্যাক্তিগত সহকারী হিসেবে ভোটের মাঠে প্রভাব রয়েছে। সংসদ সদস্যের পিএ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হবেন, সহজে এটা মেনে না নেবার মত কারন রয়েছে এমপির পরিবার থেকে এমন গুঞ্জন রয়েছে বাজারে।সেটা লোক দেখানো ভোটের কৌশল কিনা তা জানা যাবে ভোটের ফলাফলে।
এদিকে একাধিক সুত্র থেকে জানা যায়, অ্যাডঃ সফুরা বেগম রুমির প্রতি সদর আসনের সংসদ সদস্যের সমর্থন থাকলেও এমপির পরিবারের সদস্যদের আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে,রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হওয়ায় রাজনৈতিক মাঠে প্রভাব থাকায় নিজস্ব অনুসারীরা শ্যামলের দিকে ঝুঁকেছেন।
এই সমীকরন শেষ প্রযন্ত অব্যাহত থাকলে ভোটের ফলাফলে চমক আসতে পারে।
নির্বাচনে ০৫ প্রার্থী থাকলেও মুল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে অ্যাঃ সফুরা বেগম রুমী এবং আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের সাথে।আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল হাতিবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার ভোটারদের বৃহত অংশের সমর্থন পাওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন, সেটি অক্ষুন্ন থাকলে তার বিজয় সহজ হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অপর একটি সুত্র জানায় ০১আসনের এমপির পিএস শ্যামল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হবেন এটি এমপির অনুসারীদের একটি অংশ মেনে নিতে পারছেন না,ফলে এমপির পুত্র হাতিবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাহমদদুল হাসান সোহাগ তিন সংসদ সদস্যের মনোনীত প্রার্থী সফুরা বেগম রুমী কে বিজয়ী করতে মাঠে প্রচারনা চালাচ্ছেন জোড়ে কদমে।
নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা যত প্রভাব খাটান না কেনো, বিজয়ের মুল শক্তি নগদ অর্থ লেনদেন,নগদ টাকা বিতরন নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও কেউ টাকা বিতরনে পিছপা নেই।একাধিক ভোটারের সাথে কথা হলে তারা জানায়, ভোটের পরে কেউ খোঁজ রাখেনা, তাই যে টাকা বেশী দিবে তাকেই ভোট দেওয়া হবে।
নগদ টাকায় ভোটাররা যাতে প্রভাবিত না হন এজন্য সংসদ সদস্যরা ভোটারদের জন্য টিআর বরাদ্দ দেবার ঘোষনা দিয়েছেন এমন আভাস পাওয়া গিয়েছে।রাজনৈতিক প্রভাবে সফুরা বেগম এগিয়ে থাকলেও অর্থ এবং প্রচারনায় শ্যামল এগিয়ে রয়েছেন, এখন দেখার বিষয় সকল সমীকরন শেষে কে হন লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।