মোঃ হাসান আলী (সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটীতে জলপাই হাট এখন সরগরম। মৌসুমজুড়ে জমজমাট এ হাটে প্রতিদিন জলপাই বিক্রি করতে আসেন শতাধিক ব্যবসায়ী ও চাষিরা। মান ও গুণের কারণে দিনদিন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখানকার জলপাইয়ের ভালো দামও পাচ্ছেন বাগান মালিকরা।
মঙ্গলবার ( ২৪ অক্টোবর ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের কাছ থেকে জলপাই কিনে বাছাইয়ের পর বস্তায় ভরছেন।
হাটে জলপাই বিক্রি করতে আসা ঘোড়াচরা গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, মৌসুম শুরুর আগেই আগাম জামানত দিয়ে বাগান কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। তবে আমি আমার বাড়ির আঙিনায় লাগানো গাছ বিক্রি করেনি। সেখান থেকে দু-একদিন পরপর দুই মণ করে জলপাই এ হাটে এনে বিক্রি করি।
হার্টের বেপারী মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ হাটে ব্যবসায়ীরা আসেন। জলপাই পরিপক্ব হলে নিজেরাই বাগান থেকে তুলে নিয়ে যান। প্রতিদিন জলপাই হাট ছাড়াও রবি ও বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হাট বসে। ব্যবসায়ী আবু তাহের বলেন, এ মৌসুমে ১৫ জন মিলে প্রায় ২০ লাখ টাকার জলপাই বাগান কিনেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাগান থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার জলপাই বিক্রির আশা করছেন তিনি।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, হাটে গড়ে প্রতিদিন ৪-৬ লাখ টাকার জলপাই বিক্রি হয়। প্রকারভেদে প্রতি কেজি জলপাইয়ের দাম থাকে ১৫-৩৫ টাকা। এখানে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২০-২৫ টন জলপাই বেচা কেনা হয়। স্থানীয় হামিম দামিন গ্রামের হযরত আলী বলেন , জলপাইয়ের ছোট-বড় অনেক বাগান রয়েছে এ এলাকায়। আরও নতুন নতুন বাগান গড়ে উঠছে। জলপাইয়ের ভালো দাম পাওয়ার কারণে চাষিদের মধ্যে জলপাই বাগান করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।
বাগবাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সুষ্ঠু বিপণন ব্যবস্থার কারণে এখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা সমৃদ্ধ হচ্ছে। এ হাটে জলপাই বিক্রি হয় সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, এ বছর শুধু মাত্র সদর উপজেলাতে ৩১ হেক্টর জমিতে জলপাই চাষবাদ হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৯১০ মেট্রিকটন।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ( ডিডি) কৃষিবিদ বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন অর্থকারী ফসলের পাশাপাশি মাল্টা, কমলা, পেয়ারা, জাম্বুরা এবং জলপাই চাষে আশাতীত সাফল্য মিলেছে। এ কারণে এই অঞ্চলে জলপাই চাষ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।