মোঃআব্দুল্লাহ সিলেট (বিশ্বনাথ) প্রতিনিধি
নানা নাটকিয়তার পর অবশেষে মধ্যরাতে ঘোষণা করা হয়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচন। হাড্ডাহাডি লড়াইয়ে সামান্য ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির সাবেক সিলেট জেলা সহ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরী।
তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৩২২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ আনারস প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৯৬৮ ভোট। আর দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী সেবুল মিয়া ১১ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে ৩য় হয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা যুবলীগ নেতা মুহিবুর রহমান সুইট। তিনি মাইক প্রতীকে পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আল ইসলাহ’র ইসলাম উদ্দিন বই প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫১২ ভোট।
আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে করিমা বেগম কলস প্রতীকে ২৩ হাজার ৬৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জুলিয়া বেগম ফুটবল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ১৫৬ ভোট। বুধবার রাত পৌণে ১টায় ফলাফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটানিং কমকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তি।
এদিকে, বুধবার ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলেও ৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু খাজাঞ্চি ইউনিয়নের নোয়ারাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারের ফলাফল ঘোষণায় দেরি হয়।
এরমধ্যে ওই কেন্দ্রের ফলাফল সীটে কারো স্বাক্ষর না থাকায় ও ভোটের ব্যবধান কম থাকায় ফলাফল মানেন নি আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন।
সাথে সাথে তার সমর্থকরা উপজেলা মাঠে বিক্ষোভ শুরু করেন। পাশাপাশি কাপ পিরিচের চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেল আহমদ চৌধুরী ও দোয়াত কলমের চেয়ারম্যান প্রার্থী সেবুল মিয়ার সমর্থকরাও মিছিল শুরু করে।
দীর্ঘক্ষণ বাক-বিতন্ডার পর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ভোট পূন:গণনার আবেদন জানিয়ে সমর্থকদের নিয়ে চলে যান। পরে চেয়ারম্যান প্রার্থী সেবুল মিয়াও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সমর্থকদের নিয়ে চলে যান।
কিন্তু বিক্ষোব্ধ জনতা মাঠ ছেড়ে চলে না যাওয়ায় রাত ১২টায় ৩ প্লাটুন বিজিবি এসে বিক্ষোব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পৌণে ১টায় সহকারী রিটানিং কমকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তি ফলাফল ঘোষণা করেন। এ সময় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়াও উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার ৭৪টি কেন্দ্র একটানা ব্যালেটের মাধ্যমে চলে ভোট গ্রহণ। সকালের শুরুতেই ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। দিন বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে।
এদিকে, এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন । তারা হলেন, সাবেক জেলা বিএনপি নেতা সোহেল আহমদ চৌধুরী (কাপ-পিরিচ), উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন (আনারস), উপজেলা বিএনপির নেতা মো. সেবুল মিয়া (দোয়াত কলম), পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (টেলিফোন), উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গৌছ খান (কইমাছ), প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা শমসাদুর রহমান রাহিন (শালিক), প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এআর চেরাগ আলী (ঘোড়া), প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আকদ্দুছ আলী (হেলিকপ্টার), প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন (উট) ও প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী এনাম (মটর সাইকেল)।