মোঃ খান সোহেল, নেত্রকোনা প্রতিনিধি
খনিজ সম্পদে ভরপুর ৪টি বর্ণে বেষ্টীত উপজেলা নাম তার দুর্গাপুর। নেত্রকোণার দুর্গাপুর-ভারত সীমান্ত জুড়ে রয়েছে সবুজ বনলতা ঘেরা আর উঁচু উঁচু কালো পাহাড়। নৈর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ব্যপক সম্ভাবনা। ১৯৫৭ সালে দুর্গাপুর উপজেলায় উত্তর সীমান্তে মূল্যবান সম্পদ সাদামাটির সন্ধান পাওয়া যায় প্রায় ২০ কিলোমিটার জুড়ে। ভারত সীমান্তের ভিতর দিয়ে প্রভাহিত সেই সুসং মহারাজার কীর্তিগাথা সোমেশ্বর পাঠকের নামানুসারে মেঘালয় কন্যা খরতা সোমেশ্বরী নদীতে রয়েছে প্রচুর কালো সোনা (কালো গিলেন পাথর)। সোমেশ্বরী, আত্রাখালী ও কংশ নদীর বুকে রয়েছে পাহাড় সমান বালির মূল্যবান বালির স্তুপ। সরকারি প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে সোমেশ্বরী নদীতে রয়েছে ম্যাগনেটাইড জিরকোণ, দস্তা, হেভিমিনারেল এবং সিলিকন জাতীয় পদার্থ। সড়ক নির্মাণে রাস্তার সীল কোড কাজে রাসায়নিক দ্রব্য তৈরীতে সিলিকন জাতীয় বালি ব্যবহারে খুব উপযোগী এবং সিলিকন বালি কাঁচ শিল্পের জন্য অপরিহার্য। তাই সোমেশ্বরী নদীর বালি দ্বারা উন্নতমানের কাঁচ শিল্প গড়ে উঠতে পারে। এতে হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হতে পারে। মৃত খরতা সোমেশ্বরী নদীর বুকে রয়েছে হাজার হাজার টন কয়লা ও ঘিলাইন নুড়ি পাথর। দৈনিক শত শত নারী পুরুষ নদীর বুক থেকে উত্তোলন করে ট্রাক যোগে এখান থেকে জেলার বাহিরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সোমেশ্বরী নদীর তীরে দাঁড়ালেই প্রতিদিন দেখা যাবে এই দৃশ্য। দুর্গাপুর-কলমাকান্দা পাঁচগাও, লেংগুড়া, বারমারী, নলুয়াপাড়া, ভবানীপুর, বিজয়পুর, আড়াপাড়া, চারুয়াপাড়া, গাইমারা ও ধোবাউড়া পুটিমারী পর্যন্ত এলাকায় রয়েছে কোটি কোটি টাকার সাদা মাটি, যা এখানে সাদা সোনা নামে খ্যাত। তাছাড়া সীমান্তের পাহাড়ী এলাকায় চা বাগান, কমলা, মালটা ও আনারস চাষে ব্যপক সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দুর্গাপুর বিরিশিরি ইউনিয়নের দাখিনাইল চৌরাস্তা এবং কাকৈরগড়া ইউনিয়নের গন্ডাবেড় ও বড়বাট্টা গ্রামের পেট্রোবাংলা অনুসন্ধান চালিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পেয়েছেন অনেক আগেই। এই উপজেলায় কোন ক্ষুদ্র কুটির শিল্প নেই। শুধু বিরিশিরিতে উপজাতীয়দের একটি তাঁত বয়ন কেন্দ্র আছে। এই উপজেলায় যথেষ্ট পরিমাণে বাঁশ ও কাঠ পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ লাভ করলে এখানে সহজেই বাঁশ ও কাঠের কুটির শিল্পের প্রসার ঘটতে পারে। সোমেশ্বরী নদীতে অসংখ্য নুড়ি পাথর, কালো কয়লার পাথর, মোটা বালি যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ আছে। ব্যবসায়ীক ভিত্তিতে অত্যন্ত লাভজনক ভাবে এইগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই সরকারি পর্যায়ে দুর্গাপুরে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে একদিকে সরকার যেমন পাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয়, অপরদিকে হাজার হাজার মানুষের কর্মজীবনের সংস্থান হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষণ মহল।
আরো পড়ুন, দোয়াবাজারে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ