বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সবসময়ই উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেছে এবং কৃষিখাতকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং সবসময়ই কাজ করে গেছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন। তিনি নিজ হাতে কোদাল তুলে নিয়ে খাল খনন করেছিলেন, যা বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে।
তার এই কর্মের ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান দেশের মাটি ও মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা সবসময় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং কৃষিখাতে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন, যেন কৃষকরা তাদের পরিশ্রমের মূল্য পায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কৃষিখাতকে বিশেষভাবে মূল্য দিচ্ছেন। তারেক রহমান তাঁর ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখায় কৃষিকে খুব গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছেন।
তারেক রহমান বিশ্বাস করেন, কৃষক কেবল খাদ্য উৎপাদনকারী নয়, বরং দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। তার লক্ষ্য কৃষি খাতের উন্নয়ন এবং কৃষকদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা, যাতে তারা তাদের কষ্টের ফল পায় এবং দেশের উন্নয়নে অংশ নিতে পারে। সেচ ও খাল খনন কর্মসূচি পুনরায় চালুর মাধ্যমে, তিনি কৃষকদের পানির অভাবের সমস্যা সমাধান করতে চান, যেমনটি শহীদ জিয়াউর রহমান করেছিলেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে, কৃষকদের জন্য একটি আধুনিক সেচ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে কৃষি উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
তারেক রহমানের ভাবনায় কৃষকদের জন্য যে সমবায় ভিত্তিক ব্যবস্থার প্রস্তাব রয়েছে, তা যেন একটি নতুন আশা ও শক্তি দেয় গরীব কৃষকদের। তিনি জানেন, বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের পরিশ্রমে দেশের খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখে, অথচ অনেক সময় তারা সেই পরিশ্রমের সঠিক মূল্য পায় না। তারেক রহমান এই অবস্থা পরিবর্তন করতে চান। তিনি কাজ করতে চান যাতে কৃষকরা অতিরিক্ত পানি ব্যবহার না করে এবং তা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই উদ্যোগগুলি দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে এবং কৃষকরা তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে সক্ষম হবে। তারেক রহমানের এই চিন্তা-ভাবনা কৃষকদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং দেশের কৃষি খাতকে বিশ্বমানে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তারেক রহমানের প্রতিশ্রুতি দেশের কৃষকদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং জীবনমান উন্নয়নে নিবেদিত। তিনি বিশ্বাস করেন যে, কৃষি খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ এবং এর সঠিক ব্যবস্থাপনা কৃষকদের জন্য এক নতুন সমৃদ্ধি আনে। তার লক্ষ্য দেশের জিডিপির ৮% কৃষি খাতে বরাদ্দ করা, যা সরাসরি কৃষকদের কাজে লাগবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। এই বরাদ্দের সুবিধাগুলি যাতে কৃষকদের হাতে সরাসরি পৌঁছায়, তার জন্য তিনি কঠোর মনোযোগ দিতে চান, বিশেষ করে যাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা কোনোভাবেই সুবিধা না পায়। সারের ভর্তুকি ও সরকারি সহায়তার পূর্ণ সুবিধা যেন কৃষকরা গ্রহণ করতে পারে, সেজন্য তিনি একটি স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান।
তারেক রহমান শুধু কৃষকদের জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্যও একটি সহায়ক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি জানেন, বাজারে বিভিন্ন পণ্য কেনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের যে কষ্ট হয়, তা শুধুমাত্র তাদের পকেটের ওপরই চাপ সৃষ্টি করে না, বরং কৃষকদের জন্যও ক্ষতিকর। তাই তিনি সিন্ডিকেট এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চান, যাতে কৃষকরা তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য পায় এবং সাধারণ মানুষও সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারে। তারেক রহমানের এই উদ্যোগে দেশের কৃষি এবং বাজার ব্যবস্থা উভয়ই সুষমভাবে উন্নতি লাভ করবে, যা সবার জন্য লাভজনক হবে।
এছাড়াও, ছোট ও মাঝারি কৃষকদের জন্য খাস জমি ব্যবহার করে ফসল মাড়াইয়ের জায়গার ব্যবস্থা করতে চান তিনি, যা তাদের উৎপাদন কার্যক্রমকে আরও সহজ করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য তিনি কৃষি বিমা চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন, যা কৃষকদের সম্পদ রক্ষা ও জীবনযাত্রার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। তারেক রহমানের এই প্রতিশ্রুতিগুলো প্রমাণ করে যে, তিনি কৃষকদের শুধু উৎপাদনের নয় বরং তাদের জীবিকার সার্বিক উন্নয়নে মনোযোগী।
তারেক রহমানের চিন্তা কেবল বরাদ্দ বৃদ্ধি ও সরাসরি কৃষকের হাতে সহায়তা পৌঁছানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তিনি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নকে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে দেখেন। তার পরিকল্পনায় রয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে পণ্যভিত্তিক কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন, যাতে ফসল বেশি উৎপাদন হলেও তা নষ্ট না হয় এবং কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে পারে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, এসব উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদন থেকে লাভবান হওয়া সহজ হবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, যা আমদানি নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে।
এছাড়া, তারেক রহমান দেশের কৃষকদের জন্য এক নতুন দিগন্ত তৈরি করতে চান, যেখানে তারা শুধু উৎপাদনকারী নয়, বরং অর্থনৈতিকভাবে সুরক্ষিত এবং উন্নত জীবনযাপন করতে পারবেন। তিনি কৃষকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য কৃষি বিমা চালুরও পরিকল্পনা করেছেন, যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে তাদের ক্ষতি মোকাবেলা করা সম্ভব হয়। তারেক রহমানের এই উদ্যোগগুলো কেবল তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, বরং দেশের কৃষি ও কৃষকদের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের প্রতিফলন।
তারেক রহমানের কৃষি খাতে রপ্তানিমুখী ব্যবস্থা গড়ে তোলার যে স্বপ্ন, তা আমাদের জন্য এক অসীম সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি চমৎকার সুযোগ। তিনি বিশ্বাস করেন, দেশের কৃষি খাত শুধুমাত্র খাদ্য উৎপাদনের খাত নয়, বরং একটি অর্থনৈতিক শক্তি হতে পারে। কৃষিক্ষেত্রে শিল্পায়ন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, এবং সঠিক নীতিমালার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি। তারেক রহমানের এই ভাবনা আমাদের দেশের কৃষি খাতকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে এবং তা বিশ্বের দরবারে আমাদের পরিচিতি এবং সম্মান বৃদ্ধি করবে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে, বাংলাদেশের কৃষি খাতের অপার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে মানুষ। তিনি যখনই তৃণমূলে ছুটে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, তখনই তিনি কৃষকদের কল্যাণে কাজ করেছেন, ভেবেছেন কৃষকদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও মানবিক মর্যাদার কথা। জনগণের ভোটের মাধ্যমে বিএনপি সরকার গঠনের পর, তার পরিকল্পনাগুলো বাস্তবে রূপ নিলে, কৃষি খাতে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের একটি রোল মডেল, যেখানে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা ও কৃষকের ক্ষমতায়নে শক্তিশালী হবে কৃষিখাত, নিয়ন্ত্রিত হবে দ্রব্যমূল্য এবং গড়ে উঠবে একটি সমৃদ্ধ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ।
লেখক: মাহবুব নাহিদ, কথাসাহিত্যিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।