মোঃ মাহাবুব আলম তুষার স্টাফ রিপোর্টার
মানিকগঞ্জের শানবান্ধা এলাকার রোকসানা (৪৫) হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করে ঘাতক স্বামী বাবুল কে খুলনা কোতোয়ালি থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে মানিকগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী সিংগাইর উপজেলার চর নয়াবাড়ি গ্রামের মৃতঃ ছইজু্দ্দীন এর ছেলে ফজল (৭১) গত ১৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮ টায় থানা পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পায় যে, মানিকগঞ্জ থানাধীন পশ্চিম শানবান্ধা এলাকার বাবুল মিয়া’র নতুন নির্মানাধীন বাড়ির পরিত্যক্ত একতালা ভবনের উত্তর পশ্চিম কোনের রুমের ভিতরে বালু মাটির নিচ হতে অজ্ঞাতনামা মহিলার (বয়স অনুমান ৪৫ বছর) লাশ উদ্ধার হয়েছে এবং লাশ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মানিকগঞ্জ এর মর্গে আছে।
উক্ত সংবাদ শুনে ফজল ও তার নিকট আত্মীয় স্বজন দ্রুত হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে লাশ দেখতে পায়, লাশের ডান হাতের ট্যাটু ও ঘটনাস্থল হতে উদ্ধারকৃত হাত ঘড়ি দেখে এবং লাশের অবয়ব, শারীরিক গঠন দেখে বাদী ফজল এর ধারনা হয় লাশটি তার ছোট বোন রোকসানার (৪৫) । উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
মামলাটি রুজু হওয়ার পর মানিকগঞ্জ সদর থানার চৌকশ একটি অভিযানিক দল হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে খুলনা কোতয়ালী থানাধীন হাদিস পার্কের সামনে হতে ১৯ অক্টোবর পরিকল্পিত হত্যাকারী মোঃ বাবুল কে গ্রেফতার করে।
মোঃ বাবুল মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার দরিকান্দি গ্রামের শেখ কাশেমের ছেলে। গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানায়, গত ০৩ বছর আগে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চর নয়াবাড়ী গ্রামের ছইজুদ্দীনের কন্যা রোকসানা (৪৫) এর সাথে তার পরিচয় হয় এবং বিয়ে করেন।
বিয়ের পর রোকসানা অধিক উপার্জনের আশায় সৌদী আরব চলে যায়। রোকসানা’র আয়ের টাকা দিয়ে পশ্চিম শানবান্ধা এলাকায় জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। রোকসানা গত ৬ অক্টোবর প্রবাস হতে বাংলাদেশে এসে সাভার এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। পরবর্তীতে ১৩ অক্টোবর রোকসানাকে সাথে নিয়ে পশ্চিম শানবান্ধা বাসায় আসেন। সেখানে তাদের দুজনের মধ্যে পরিবারের একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বাবলু গভীর রাতে ঘরে থাকা কাপড়ের পাইরের রশি দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় শ্বাসরোধ করে রোকসানাকে হত্যা করে।
এরপর ১৪ অক্টোবর মৃত ব্যক্তির লাশ গুম করার জন্য ঘরের উত্তর পশ্চিম কোনের রুমের ভিতর বালু মাটি খুড়ে লাশ পুতে মৃত রোকসানার ব্যবহৃত স্যালোয়ার কামিজ, ওড়না এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কাপড়ের পাইরের রশি আংশিক পুড়িয়ে ফেলে রাখে । অতপরঃ মৃত রোকসানার ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে আসামী মোঃ বাবলু আত্মগোপনে চলে যায়।