আব্দুল জব্বার যশোর জেলা প্রতিনিধি
যশোরে নিজেকে কবিরাজ দাবি করে এক বন্ধ্যা নারীর সন্তান হবে আশ্বাস দিয়ে অভিনব কায়দায় সোনা নিয়ে পালিয়েছিলো এক যুবক। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যশোরের পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক ও এসআই রতনের সমন্বয়ে একটি টিম পাবনা জেলার আমিনপুর থানা এলাকা থেকে অভিনব সেই প্রতারককে আটক করেছে।
আটক জুয়েল শিকদার পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের মনি সিকদারের ছেলে। শুক্রবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তার জবানবন্দি গ্রহন শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পিবিআই জানায়, শহরের রেলগেট এলাকার হোটেল আবাসিকে গত ৭ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত অবস্থান নেন। এসময় জুয়েল হোটেলের আশপাশ এলাকায় নিজেকে একজন বড় মাপের কবিরাজ পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেরাতে থাকে। সে জানায় তার চিকিৎসায় প্যারালাইজড রোগী ভালো হয় এবং বন্ধ্যা নারীদের গর্ভধারণ হয়। একপর্যায় ১২ অক্টোবর রেল রোড রায়পাড়ার হোসনে আরা মুক্তির বাড়িতে যায়।
সেখানে যেয়ে জীন হাজির করে মুক্তিকে জানায় তার ছেলে সন্তান হবে আট মাস ১৭ দিন পর। কিন্তু সেক্ষেত্রে বেশ কিছু কাজও করতে হবে। সেক্ষেত্রে আয়না লাগবে ও সোনা রুপা লাগবে। সোনা রুপা পানির মধ্যে ভিজায় রাখতে হবে। এবং এরপর সে তাবিজ করে দিবে। মুক্তি বিশ্বাস করে সোনারুপা জুয়েলের কাছে দেয়।
এরপর একটি ওড়না আনতে বলে। একটি স্বর্ণের চেইন, তিনটি আংটি ও দুই ভরি ওজনের রুপার দুইটি চেইন ওই ওড়না ছিড়ে ছোট্ট একটি পুটলি করে একটি গ্লাসে ভিজিয়ে রেখে চলে আসে। পরে সে মুক্তির গহনার মত দেখতে ইমিটেশনের সোনার গহনা নিয়ে একটি পুটলি বানিয়ে বিকেলে ফের মুক্তির বাড়িতে যায়।
পরে আবারো জীন হাজিরের কথাসহ বিভিন্ন কৌশলে গ্লাসের মধ্যে রাখা আসল সোনার পুটলি নিয়ে ইমিটিশনের পুটলি রেখে চলে আসে। এরপর থেকেই লাপাত্তা হয়ে যায় জুয়েল। মুক্তি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে পিবিআই অফিসে যেয়ে ১৯ অক্টোবর অভিযোগ করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় পাবনা জেলায় অভিযান চালিয়ে পিবিআই জুয়েলকে আটক করে। এঘটনায় মুক্তি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। এ বিষয়ে যশোরের পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক বলেন, জুয়েল সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় যেয়ে এ ধরণের প্রতারণা করে থাকে। সে মুলত টার্গেট করে বন্ধ্যা নারীদের।
যারা সন্তানের জন্য আকুল হয়ে থাকে। তাদের কাছে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সোনা গহনা লুট করে সটকে পরে। তিনি আরও বলেন এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের আটকে তারা অভিযান অব্যাহত রেখেছে।