এম.সাইদুর রহমান-ক্রাইম রিপোর্টার:
পটুয়াখালীর বাউফলে মেইন সড়কের পাশে মানবেতর জীবন কাটানো চূড়ামনি ও তার দুই এতিম সন্তান গোপাল (২০) ও বিষ্ণু রানী(১২)।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.বশির গাজী তাদেরকে মুজিব শতবর্ষের একটি ঘর উপহার দিয়েছেন। চূড়ামনির স্বামী সুবল চন্দ্র মিস্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্বজনরা এতিম দুই সন্তানসহ তাদেরকে বাড়ি থেকে বেড় করে দেন।সেই থেকে চূড়ামনি ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে জীবন যুদ্ধে চালিয়ে যান।অভাব অনাটন তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার মার করে দিয়েছে।যাযাবরের মতো জীবন কাটায় পরিবারটি।অসহায়ত্ব যেন তাদের জীবন সঙ্গী।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়,’ বাউফলের ইউএনও মো. বশির গাজী মুজিব শতবর্ষের নির্মাণাধীন ঘরের অগ্রগতি দেখতে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে একটি ঝুপড়ি ঘরের দিকে চোখ পরে তার। গাড়ি থেকে নেমেই কাছে গিয়ে দেখেন এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। দুই সন্তানকে নিয়ে চূড়ামনি বসে রয়েছেন।শোয়ার জায়গাটুকু নেই তাদের।
এখানে তারা গত দুই বছর ধরে আছেন।এর আগে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেছেন তারা। কেবল মেয়ের কথা চিন্তা করে বগা বাজারের কাছে থাকছেন তিনি।ইউএনও মো.বশির গাজী তাদের কষ্টের কথা শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।তাৎক্ষণিক তিনি মুজিব শতবর্ষের একটি ঘর উপহার দেওয়ার কথা বলেন তাদের। ঘরটির নির্মাণ কাজ আগামী ২-৪ দিনের মধ্যে শেষ হবে।চূড়া মনি তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে ওই ঘরে উঠবেন।
চূড়ামনি জানান, ১০ বছর আগে তার স্বামী সুবল চন্দ্র মিস্ত্রী মারা যাওয়ার পর পরিবারের লোকজন তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কেটেছে তাদের। দুই সন্তানকে ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে রেখে কাজের সন্ধানে যেতেন তিনি। সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতেন।তার ছেলে গোপাল এখন বগা লঞ্চঘাট এলাকায় বোতলে পানি ভরে বিক্রি করেন। এখান থেকে তাদের যে আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে চলে সংসার।এই দুরাবস্থার মধ্যে তার মেয়ে বিষ্ণু রানী স্থানীয় গার্লস স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন।মেয়েকে সুশিক্ষিত করতে চান তিনি।
ইউএনও মো. বশির গাজী বলেন, রোববার বগা ডা.ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজের কাছে মুজিব শতবর্ষের নির্মাণাধীন ঘর পরিদর্শনে যাওয়ার পথে বগা বাজার ব্রিজের কাছে রাস্তার পাশে একটি ঝুপড়ি ঘর দেখতে পাই। গাড়ি থেকে নেমে কাছে গিয়ে পরিবারটির অসহায় অসস্থার কথা জানতে পারি। তাই তাদেরকে আশ্রয়ের একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছি।