জি,এম,আমিনুর রহমান সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:
প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, ফণি, বুলবুল ও আম্পানের মতোই ঘূর্ণিঝড় রিমালের ভয়াবহতা থেকে বুক পেতে সাতক্ষীরা উপকূলকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন।
বাঘের মতো তর্জন-গর্জন করে আসা ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রথমে সুন্দরবনে আঘাত হানে। এরপর প্রবেশ করে সাতক্ষীরায়। এতে এখন পর্যন্ত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের গাবুরায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ও উপকূলবর্তী এলাকার পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিনষ্ট হয়েছে। উপড়ে পড়েছে অনেক গাছপালা। এছাড়া তেমন বড় ধরনের আর
কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।সাতক্ষীরা আবহাওয়া কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল সুন্দরবন উপকূলে প্রথম আঘাত হানে। এরপর থেকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের কেন্দ্র ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরা উপকূল অতিক্রম করে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম কে এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলাসহ বিভিন্ন সময় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ছোবল থেকে উপকূলীয় এলাকার মানুষ ও সম্পদকে রক্ষা করেছে। এবারো মায়ের মতো বুক পেতে উপকূলীয় এলাকার মানুষ ও সম্পদকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল থেকে রক্ষা করেছে।
এসময় ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানি বেড়ে জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ বনভূমি। এতে জোয়ারের নোনাপানিতে বনভূমির সঙ্গে তলিয়ে গেছে শতাধিক মিঠাপানির পুকুর। এসব পুকুর থেকে বনের প্রাণী ও বনজীবীরা খাবার পানি পেতেন। তবে, বন্য প্রাণীর কোনো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
এবিষয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের তরুণ জলবায়ুকর্মী এস এম শাহিন আলম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বনাঞ্চলের ওপর দিয়ে দুই ধরনের ধাক্কা যায়। প্রথমে তীব্র গতির বাতাস এরপর জলোচ্ছ্বাস।
সুন্দরবনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাস বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অপেক্ষাকৃত কম গতি নিয়ে স্থলে পৌঁছায়। আবার জলোচ্ছ্বাস স্থলভাগে পৌঁছানোর আগে সুন্দরবনে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক কমে যায়। এভাবেই সুন্দরবন প্রতি ঝড়ে উপকূলকে রক্ষা করে। সুন্দরবন বুক চিতিয়ে যুদ্ধ না করলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হতো।