নিজস্ব প্রতিবেদক
অসহযোগ ছাত্র আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনের মাথায় শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করার পর গত ৫ আগস্ট সোমবার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বরাত দিয়ে জানা যায় যে, বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা ৬আগষ্ট মঙ্গলবার সকাল থেকে খোলা থাকবে। একই সঙ্গে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। সেই ধারাবাহিকতায় ৬আগষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে। তবে ৭আগষ্ট বিকাল তিনটায় ফরিদপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ৭দাবি উত্থাপন করে। এসময় সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ব্যবসা শিক্ষার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বৈশাখী আক্তার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সাত দফা দাবি পেশ করে। দাবিগুলো হলো:
(১) ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
(২) ছাত্র সংসদ রুকসু সংস্কার করে সাধারণ ছাত্র অর্থাৎ রাজেন্দ্র কলেজের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
(৩) আমরা একটা একাডেমীক ভবনের মধ্যে একটানা পাঁচটি ক্লাস করি, আমাদের কোন বিরতি দেওয়া হয় না, তাই আমরা পাঁচটা ক্লাসের মধ্যে তৃতীয় ক্লাসে বিশ মিনিটের জন্য বিরতির দাবি করছি
(৪) একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক ভবনের মধ্যে ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
(৫) ছাত্র আন্দোলনের শহীদ স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ বানাতে হবে।
(৬) ছাত্র আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিপর্যস্ততা, ভয় একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির পরবর্তী পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হবে।
(৭) ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে সংবর্ধনা দিতে হবে।
এসময় ছাত্রদের আহত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সাহায্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজেন্দ্র কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হালিম বলেন, “তার(আহত শিক্ষার্থী) আরোগ্য লাভ করুক, সেই কামনা করছি। এখানে আমাদের কিছু করার থাকলে ম্যাডাম(অধ্যক্ষ) সেটা করবেন, তার জন্য কি করা যায় আরো কেউ থেকে থাকে তাহলে আমরা অলরেডি আমাদের অধ্যক্ষ ম্যাডামের নেতৃত্বে একটা ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেছি। এ ধরনের কেউ হাসপাতালে থেকে থাকে, তার চিকিৎসা খরচ বাবদ যে সমস্ত প্রয়োজন আছে সেগুলা আমাদের তরফ থেকে ইনশাল্লাহ সেগুলো করব।”
এছাড়া তিনি আরো বলেন, লেজুর ভিত্তিক রাজনীতির অবসান হওয়া উচিত, একদল বাদ দিয়ে অন্য দল লেজুর ভিত্তিক ক্ষমতায় না আসে সেদিকে তোমাদের খেয়াল রাখা উচিত, এটাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। তোমাদের যে লক্ষ্য এবং আমাদের শিক্ষকদের যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য কিন্তু এক। আমরা সেটি সুন্দর সময় ব্যবস্থায় কায়েম করতে চাই।
এছাড়া তিনি তৎক্ষণাৎ অধ্যক্ষের নির্দেশে ছাত্রদের জন্য ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ রমা সাহা, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর এস. এম আব্দুল হালিম, প্রফেসর শহিদুল ইসলাম বাবু, প্রফেসর এ.বি.এম. সাইফুর রহমান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুর জেলার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আরাফাত শাহ, জনি বিশ্বাস, মোহাম্মদ আশ্রাফ, তন্ময় রহমান সহ আরও সহ-সমন্বয়ক বৃন্দ এবং সকল সাধারন শিক্ষার্থীরা।