মোঃ বুলবুল ইসলাম খানসামা -প্রতিনিধি:
নানা সমস্যা আর জনবল সংকটে জর্জরিত দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা উন্নীত অবকাঠামো উদ্বোধন করা হলেও জনবল ৩১ শয্যার রয়েছে। এতেও মিলছে না পর্যাপ্ত জনবল। আশানুরূপ সেবা পাচ্ছেন না গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র রোগীরা। এ হাসপাতালে প্রতিদিন আউটডোরে ৪০০ থেকে ৫০০ রোগী আসে। বেডে সব সময় ১০০ থেকে ১২০ রোগী ভর্তি থাকেন। এতে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ রোগী এবং রোগীর স্বজনরা। নার্সদের ব্যবহার ও খাবারের মান নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৩১ শয্যায় হাসপাতালে সরকারি ভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ১৬ চিকিৎসক থাকা কথা থাকলেও আছেন ৮ জন, ৮ জন শূন্য। সিনিয়র-জুনিয়র নার্স ৩৭ জনের স্থলে আছেন ৩২ জন, ৫ জন শূন্য। স্বাস্থ্য সহকারী ৮১ জন স্থলে আছেন ৫৫ জন, ২৬ জন শূন্য। আয়া ২১ জন স্থলে আছেন ১১ জন, ১০ জন শূন্য। এছাড়াও ৫০ শয্যায় হাসপাতালে সরকারি ভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ২৬ চিকিৎসক থাকা কথা থাকলেও আছেন ৯ জন, ১৭ জন শূন্য।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই এসেছেন চিকিৎসা নিতে। উপচে পড়া ভিড় দেখে অনেকে সেবা না নিয়ে রেগে গিয়ে চলেও যাচ্ছেন। অনেকে অপেক্ষা করছেন সিরিয়ালের জন্য। আবার অনেকে ভর্তি হচ্ছেন।
রোগীর স্বজন রিয়াদ বলেন, আমার ভাইকে নিয়ে এসেছি। সেবার মান খুবই খারাপ। অনেক ঘুরে ঘুরে সেবা নিতে হচ্ছে। এখানকার খাবারের কথা আর নাই বা বললাম।
সোহাগ ইসলাম নামে এক রোগী বলেন, নার্সদের ব্যবহার অত্যান্ত জঘন্য। দুই দিন ধরে ভর্তি ছিলাম তাতে বুঝে গেছি। হাসপাতালের স্টাফ নেই বললেই চলে।
নাম বলতে অনিচ্ছুক আরেক রোগী বলেন, সকাল থেকে এক্সরে করার জন্য বসে আছি, সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে তারপরও ডাক্তার আসার নাম নেই। নার্সদের বললে, শুধু বলে হবে ধৈর্য ধরেন। এভাবে কি হাসপাতাল চলে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং সুপারভাইজার আক্তার জাহান বলেন, এখানে অনেক রোগী আসে। আমাদের আয়ার সমস্যা। সরকারি কোন আয়া নেই। দুজন ছিল তারাও অবসরে গেছেন। এ দিকে ক্লিনারের সমস্যা। সরকারি ক্লিনার মাত্র ৩ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, আমরা আউটডোরে প্রায় ৫০০ রোগী দেখি। সংখ্যাটা আসলেই ঈর্ষণীয়। এ রোগীগুলোকে ভাল সেবা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জনবল প্রয়োজন। আমাদের ডাক্তার থেকে শুরু করে ক্লিনারসহ সব জায়গায় লোকবল অনেক কম। প্রতি মাসেই লোকবল চেয়ে প্রতিবেদন কতৃপক্ষকে পাঠাই। আশা করছি দ্রুত লোকবল নিয়োগ হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এটিএম ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমাদের বহির্বিভাগে অনেক রোগী এসে সেবা নিয়ে যাচ্ছে। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আমরা আশা করছি কতৃপক্ষের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ হবে।
ছবির ক্যাপশন: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।