আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার ৩৫০ জনে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ হাজার ৩৪৪ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৫৫ জন নিহত এবং আরও ৩২৯ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপত্যকার অন্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন উত্তর গাজা। প্রবেশ করতে পারছে না কোন ধরনের মানবিক সহায়তা। এরপরও থেমে নেই নৃশংসতা। চলমান এই হামলায় আরও অন্তত ৯৯ হাজার ১৩ জন আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে এক মাস সময়ও বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
এ নিয়ে ১৩ অক্টোবর এক সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক সাংবাদিক মঙ্গলবার এক্স-এ ওই চিঠির বিবরণ তুলে ধরেন। তবে সতর্কবার্তার বিষয়ে এখনও কোন মন্তব্য করেনি ইসরাইল।
দীর্ঘদিনের সংঘাতের মাঝে গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। এ অবস্থায় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জর্ডানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরাইলের মিত্রদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। যুদ্ধের শুরু থেকে তেল আবিবকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া দেশটি প্রথমবারের মতো হুঁশিয়ারি দিয়েছে সামরিক সহয়তা বন্ধের।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।