ডেস্ক রিডেপার্ট
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শোকজ নোটিশ পাওয়ার একদিন পর অনুসন্ধান কমিটির কাছে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ নোটিশ পেয়ে আমার দুঃখিত হওয়ার কথা, কিন্তু আমি আনন্দিত হয়েছি।’
রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে শোকজ নোটিশের জবাব দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক কাজী ইয়াসিন হাবিবের আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে শোকজের জবাব দেন শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি এ মুহূর্তে মনোনয়নপত্র ছেড়ে দেবো যদি জাতিসংঘ তিনটি কাজ করতে পারে। প্যালেস্টাইনে ইহুদিরা যেভাবে মানুষের ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, যেভাবে জীবন্ত মানুষ মারা হচ্ছে সেখানে যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে; প্যালেস্টাইনের দাবি মেনে নিতে পারে আমি মনে করবো জাতিসংঘের এ ধরনের কথা বলার এখতিয়ার আছে। যদি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে ও বাংলাদেশে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা ১০ বছর ধরে পড়ে আছে। বার্মা (মিয়ানমার) সেই রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়নি। আমি জাতিসংঘকে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করবো বাংলাদেশকে ছবক দেওয়ার আগে, কোনো মানবতা কিংবা আইন শেখানোর আগে ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নিন।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি জাতিসংঘকে প্রশ্ন করবো উনারা রাজনৈতিক দল কাকে বলবেন? যারা ২০১৩-১৪ সালে ৫০০ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, ৩ হাজার ২২৬ জনকে আগুন দিয়েছে, ৯০টি রেলগাড়িতে আগুন দিয়েছে…এগুলো অতীতের কথা। বর্তমানে প্রতিনিয়ত অগ্নিসংযোগ করছে। তাদের উনারা রাজনৈতিক সংগঠন বলবেন নাকি সন্ত্রাসী সংগঠন বলবেন? এ কথাগুলো পরিষ্কার করার পর যদি ইসরায়েলের যুদ্ধ থামাতে পারে, যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে পারে, ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের ফেরাতে পারে তাহলে অনুরোধ করব আপনারা আমাদের উপদেশ দেবেন। আমরা অবশ্যই উপদেশ মেনে নেবো।’
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই। কখনও দেখিনি, একটি-দুটি পত্রিকার রিপোর্টে প্রার্থীকে তলব করতে। এতেই প্রমাণিত হয়, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। আমরা এরকম একটি কমিশনই চেয়েছিলাম।
শান্তি মিছিল থেকে নৌকার ভোট চাওয়া ও প্রতীক প্রদর্শনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও-পোড়াও, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমার নেতাকর্মীরা শান্তি মিছিল করেছে। শান্তির প্রতীক নৌকা। সে কারণেই নৌকার স্লোগান এসেছে, প্রতীকও প্রদর্শন করেছেন কেউ কেউ।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মোহসিন মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।