মোঃ নাসির উদ্দিন, গলাচিপা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ভুল ঔষধ ব্যবহারে লক্ষাধিক টাকার ধনিয়া ও লাল শাক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঋণগ্রস্থ কৃষকের দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব মাঝগ্রাম এলাকার মৃত নুর হোসেন গাজীর ছেলে কৃষক মো. কবির গাজীর ক্ষেতে।
এ বিষয়ে কৃষক মো. কবির গাজী (৫০) জানান, আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফসল চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে দেখে আমিও ধনিয়া ও লাল শাক চাষে উদ্বুদ্ধ হই। আমি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এবং নিজের জমানো কিছু টাকা দিয়ে ৩০ কড়া জমি ৬০ হাজার টাকায় কট কবলা রাখি।
ঐ জমিতে আমি ধনিয়া ও লাল শাক চাষ করি। ফসল ভাল হলেও পরে ছত্রাক ভাইরাসে আক্রমন করে ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হলে আমি কীটনাশক ঔষধ কিনে ক্ষেতে দিলে ধীরে ধীরে ছত্রাকের মাত্রা না কমে আরো বেড়ে গেছে এবং জমির মাঝে মাঝে বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এতে আমার লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে।
আমি এখন ব্যাংকের ঋণ কীভাবে শোধ করব বুঝতে পারছি না। এখন আমাকে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। এ বিষয়ে কবির গাজীর স্ত্রী রেহেনা বেগম (৩৮) জানান, আমার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। সংসারে অভাব অনাটন দূর করতে এ বছর ঋণ নিয়ে ধনিয়া ও লাল শাক চাষ করেন। কিন্তু ছত্রাকের আক্রমন দূর করতে আমার স্বামী কয়েক দফা কীটনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না প্রতিকার।
ধনিয়া ও লাল শাক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন সংসারে অভাব আরো বেরে গেছে। আমরা এখন কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব জানি না, এখন মনে হচ্ছে না খেয়ে থাকতে হবে। এ বিষয়ে চিকনিকান্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ বলেন, কবির গাজী অসহায় প্রতিবন্ধী মানুষ।
অনেক কষ্টে চলে ওর সংসার। লাভের আশায় ধনিয়া ও লাল শাক চাষ করলেও ওর ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। তার অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেল। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা হলে কৃষি অফিসার আরজু আক্তার জানান, এ বছর ৯৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজির চাষ হয়েছে।
গত মৌসুমে সবজির ভালো দাম পেয়ে এবারও আশার আলো নিয়ে শত শত বিঘা জমিতে সবজি চাষ করে কৃষকরা। আমার বিভিন্ন সময় কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সময় উপযোগী চাষ পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি সরকারীভাবে বিনামূলে সার ও বীজ বিতরণ করি। তবে কোন কৃষকের ফসল নষ্ট হলে সরকারীভাবে প্রনোদনা দেয়ার চেষ্টা করব।