রানা ইসলাম বদরগঞ্জ রংপুর
রংপুরে বদরগঞ্জে কুল(বরই) চাষ করে সফল হয়েছেন শ্বশুর জামাতা। ৭০শতাংশ জমিতে কুল বরই চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন তার।আবার সাথি ফসল বেগুন কুল বরই মাঝে সারিবদ্ধ ভাবে লাগিয়ে বাড়তি লাভের মুখ দেখেছেন শ্বশুর জামাতা। ইতিমধ্যে তারা কুল ও বেগুন বিক্রি করে ৩লক্ষ ১০হাজার টাকা পেয়েছেন।
কুল আবাদ করে অল্প সময়ে সফল হওয়া শ্বশুরের নাম রহিম বাদশাহ ও তার জামাতার নাম মোস্তাফিজার রহমান।
দুজনের বাড়ি রংপুরে বদরগঞ্জে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের গরডাঙ্গি পাড়া গ্রামে। ওই গ্রামের পাশে বদরগঞ্জ পার্বতীপুর সড়কের পাশে ওই কুলের বিশাল বাগান গড়ে তোলেন।
গত সোমবার উপজেলা শহর থেকে ২কিলোমিটার দূরে ঔই কুল বাগানে গিয়ে দেখা যায়,সারি সারি ছোট ছোট গাছে থোকায় থোকায় কুল ঝুলছে।দেখলে মনের প্রশান্তি জুড়ে যায়।কুলের ভারে গাছের ডালগুলো নুয়ে পড়ছে।একারনে গাছে খুটি লাগানো হয়েছে পুরো বাগানের উপরে দেওয়া হয়েছে জাল।পাখিদের উপদ্রব থেকে কুল রক্ষায় জাল ব্যবহার করা হয়।বাগানের ভিতরে মোস্তাফিজার দেখা গেলো কুল গাছে পরিচর্যা করতে।
এসময় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমি ইউটিউবে কুল চাষে আধুনিক পদ্ধতি দেখার পরে আমার মধ্যে কুলের বাগান করতে উৎসাহ জাগে।তখন আমি পরিবারের সঙ্গে কথা বলি কিন্তু কুল চাষ করতে তারা মানা করছিলেন। পরে আমি সিদ্ধান্ত নেই শ্বশুর সঙ্গে নিয়ে ৭০শতাংশ জমি ৩০হাজার টাকায় এবছরের জন্য ভাড়া নিয়ে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সেখানে দেশি কুলের বিচি রোপন করি।
এরপর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বলসুন্দরী ও কাশ্মীরী জাতের কুলের ৮-১০ইঞ্চি লম্বা ডাল ৮টাকা দরে কিনি।পরে দেশি কুলের বিচি থেকে গজানো চারার সঙ্গে সংগ্রহ করা কুল গাছের ডালগুলো নিজের হাতে কলম করি। এরপর সারিবদ্ধ গাছে ফাঁকে লাগাই বেগুন গাছের চারা। কুল গাছ বড় হতেই বেগুন তুলে বিক্রি করে পেয়েছি অন্তত দেড় লাখ টাকার মতো।ইতিমধ্যে ৬৫মন কুল ১লাখ ৬০হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।এখনো গাছে যে পরিমাণ কুল রয়েছে তা বিক্রি করলে প্রায় আড়াই লাখ টাকা পাব বলে আশা করছি।
মোস্তাফিজার রহমান আরো বলেন,কুল বাগানটি বদরগঞ্জ ট্যাক্সের হাট পাকা সড়কে ধারে হওয়ায় পথচারীরা অনেকে থেমে এক নজর বাগানটির দিকে তাকিয়ে থাকে। অনেকে বাগানের কুল কিনতে চান।এ কারনে সড়কের পাশে কুল বিক্রির একটি দোকান দিয়েছি।প্রতিদিন এই দোকান থেকে বর্তমানে ৫০থেকে৬০টাকা কেজি দরে ১৫-২০মন কুল বিক্রি হয়।সবচেয়ে বড় কথা কুল চাষ করে লাভ হয় না এ কথাটি পরিবারের সদস্যদের ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিয়েছি। বাগান করতে তেমন কোনো ঝামেলা বা সমস্যা নেই। মোস্তাফিজার রহমান জানান, প্রতিটি কুলগাছে কমপক্ষে ২০ কেজি কুল ধরে। এগুলো খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু লাগে।এ কারনে বাজারে আমার কুল কিনতে অনেক ব্যবসায়ী আগ্রহী প্রকাশ করে।
চাষ পদ্ধতি
মোস্তাফিজার বলেন, ফেব্রুয়ারিতে জমিতে দেশি জাতের কুলের বিচি ৫-৮ফুট দুরে সারিবদ্ধভাবে লাগাতে হয়।মে মাসের শুরুতেই সেই বিচি থেকে গজানো গাছের সঙ্গে বলসুন্দরী কিংবা কাশ্মীর জাতের বরইয়ের ডাল কলম করে বোপন করতে হয়।বাগানের ফাঁকে বেগুন হলুদ ও মরিচ লাগায় বারতি লাভ করা যায়। কুল গাছের গোড়ায় জৈব সার ও মাসে একবার পানি দিতে হয়। গাছে তেমন রোগ বালাই হয়না।বাড়তি যত্ন হিসাবে কীটনাশক ছিটাতে হয়। ডিসেম্বরে গাছে ফল ধরে জানুয়ারি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত বরই তুলে বিক্রি করা যায়।
এই সাইটে নিজম্ব খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।