উজ্জ্বল কুমার সরকার
দু চোখ যতদুর যায় সবুজ আর সবুজ এ যেন সবুজের সমারোহ। ভারত সীমান্ত ঘেষা উত্তরের বরেন্দ্র জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর ১১ টি উপজেলার মহাদেবপুর বদলগাছি পত্নীতল মান্দা নিয়ামতপুর পোরশা,সাপাহার ও ধামইরহাটসহ আরও কয়েকটি উপজেলার মাঠ গুলো যেন প্রকৃতির সবুজ কন্যা হয়ে সেজেছে।
ধান উৎপাদনের অন্যতম জেলা নওগাঁর ১১ টি উপজেলার মাঠ গুলোতে আগমণের আবাদ সবুজ শোভা বর্ধন করছে। মৃদু মন্দ বাতাসে দোল খাচ্ছে কচি ধান গাছের সবুজ পাতাগুলো আর কৃষকের মনে সঞ্চারিত হচ্ছে স্বপ্ন আশা। এক সময় এই অঞ্চলে নানা সমস্যার কারণে তেমন ফসল হতো না একটি মাত্র ফসল হতো তাই জমি থেকেও ভাত হয়নি কৃষকের।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টা ও বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর গভীর নলকূপ যেন আশির্বাদ হয়েছে কৃষকদের। এখন একটি জমিতে তিন ফসল আবার কোন কোন জমিতে ৪ টি ফসল হয়। জানা যায়,জেলার কয়কটি উপজেলার মাঠ ঘুরে দেখা যায় ধানের গাছ গুলো সুন্দর সতেজ হয়েছে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা আছে । বোরে মৌসুমের মাঝামঝি এই সময় মাঠের পর মাঠ শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারোহ। আর এ সময়েই জেলার বিভিন্ন মাঠে বোরো ধানের সবুজ গাছ গুলোতে পোকামাকড় দমন, সার বিষ প্রয়োগ সহ নানা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে , এ বছর চলতি বোরো মৌসুমে ১১টি উপজেলায় সর্বমোট ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। অনেক নতুন বাগান তৈরী হয়েছে। যার কারনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় নি। এবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠে চাষ হয়েছে ইরি, ব্রিধান ৫১, ৫৬, ৬৯.৬০, ৬৫ বিনা ১৭ ব্রিধান ৮৭ ব্রিধান ৩৪ স্থানীয় চিনি আতপ সহ উন্নত ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছে। যা এ জেলার চালের চাহিদা পূরন করেও বাহিরে রপ্তানী করতে পারবে কৃষকরা।
এ বছর প্রথম দিকে যদিও আবহাওয়া খুব একটা অনুকূলে ছিলনা, সেচের মাধ্যমে বোরে চাষাবাদ করেছে কৃষকরা তবুও রোগ বালাই কম। কৃষি অফিসের সময় মত পরামর্শ পেয়ে কৃষকরা জমিতে যে পরিশ্রম করেছে তাতে বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
মহাদেবপুর উপজেলার ৯ নম্বর চেরাগপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরাশিয়ার সরকার পাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ চন্দ্র সরকার সুকুমার চন্দ্র সরকার সন্জীত সরকার অচিন্ত হাজরা বলেন ও ছাতমা গ্রামের কৃষক বিদ্যুৎ হোসেন, বরিয়া গ্রামের কৃষক আমজাদ, হাবিবুর,ও গুজিশহর গ্রামের কৃষক আতাব আলিসহ কয়েকজন কৃষক বলেন চলতি মওসুমের শুরু থেকেই বুক ভরা আশা নিয়ে দিনভর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাঠে কাজ করছেন। এই অঞ্চলের কৃষকরা বিপুল পরিমান ফসল উৎপাদন করে অত্র অঞ্চলের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করেও ৭০/৭৫ ভাগ ধান দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকে।
তবে একাধিক কৃষক বলেন তেল ও সারের দাম বৃদ্ধিতে এবং শুরুর দিকে পানি সেচ এবার বোরো চাষাবাদ করতে খরচ বেশী পরেছে তাই তেমন লাভ থাকবে না, ধানের ভাল ফলন ও ভাল দাম থাকলে হয়তো কিছুটা লাভ হতে পারে ।
জেলা কৃষি উপপরিচালক মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন যেহেতু বৃষ্টিপাত তুলনামূলক ভাবে কম হয়েছে এবং ইউরিয়া সার অধিকাংশ কৃষক সুষম মাত্রায় ব্যবহার করেছে তাই রোগবালাই এর আক্রমন কম আছে এবং শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে ফলন ভাল হবে আশা করছি।