মোঃ বুলবুল ইসলাম,খানসামা প্রতিনিধি
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৭ মণ ওজনের বিশাল আকৃতির দেশি জাতের দুইটি গরু। মালিকের আশা এবার কোরবানীর পশুর হাট কাঁপাবে ‘তার দুটি গরু, লাল মিয়া এবং কালোমিয়া’ নামের এই গরু দুইটি।
বিশালকার এ গরু দুইটি নিয়ে নিয়ে,ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে মাতামাতি। বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা দেখতে আসছেন, করছেন হাকডাক। গরুর মালিক দাম ভালো পেলে ‘লাল মিয়া এবং কালো মিয়া’ তুলে দেবেন ক্রেতার হাতে। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের গনি হাজী পাড়ায় মো: ফেরাস ইসলামের ছেলে পড়াশুনা শেষ করে দুটি গরু কিনেন মো: মোস্তফা হাবিবের বাড়িতে গিয়ে দেখা মেলে এই লাল মিয়া ও কালো মিয়াঁ কে।
চাটার দেওয়াল আর টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে ছিল লাল মিয়া ও কালো মিয়া। গরু দুটির লাল মিয়ার ওজন ৫৬০ কেজি, দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি ও প্ৰস্থ ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি।ও কালো মিয়ার ওজন৪৭০ কেজি, দৈর্ঘ্য৬ ফুট ২ ইঞ্চি ও প্রস্ত ৪ ফুট৩ ইঞ্চি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রচণ্ড রোদ ও তাপ থাকায় গরুদুটিকে দিনের ৩ বার গোসল করাতে হয়। গরু দুটির মাথার ওপর সব সময় ২ টি ফ্যান চলে। দেখা শোনার জন্য পরিবারের লোকজন ও মালিক মোঃ মোস্তফা রহমান নিজেও যত্ন নেন। গরু দেখতে আসা মোঃ মানিক ইসলাম বলেন, আমি কয়েকদিন ধরে মানুষের কাছে শুনতেছি একটি অনেক বড় দুইটি ষাঁড় লালন পালন করছে। সেটি দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়ে আগামীতে গরু নিয়ে নিয়ে লালন পালন করবো।
এলাকাবাসী মোঃ মশিউর ইসলাম জানান, পুরো থানায় এ রকম গরু কোথাও দেখি নাই, অনেকেই গরুটি দেখতে আসছে। গরুর ক্রেতা এসে দাম দর করছেন। মাঝে মাঝে এসে গরুটিকে দেখে যাই। (গরু দুটিকে দেখে বলে সোন মিয়া)জানান, আমি গরু দুটির কথা শুনেছি। অনেক বড় এই গরু দুইটির ওজন (লাল মিয়ার নাকি ১৪ মণ) হবে। (ও কালো মিয়ার নাকি ৭ মণ)আমি খুব শীঘ্রই সরজমিনে গিয়ে দেখে শুনে দাম বলব। গরু দুটির মালিক মো. মোস্তফা রহমান বলেন, আমরা কালো মিয়া এবং লাল মিয়া কে সন্তানের মতোই বড় করেছি। দেশি জাতের এই গরু দুটিকে প্রতিদিন খড়,কাঁচা ঘাস, গমের ভূসি, খৈল, চিটা গুরসহ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ানো হয়। অতিরিক্ত গরমে যাতে লাল মিয়া ও কালো মিয়া অসুস্থ হয়ে না পড়ে সে জন্য গরুর ঘরের মধ্যে সারাক্ষণ চালানো হয় ফ্যান। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহায়তায় গরুটির পরিচর্যা করা হয়।
বর্তমানে গো-খাদ্য দাম বেশি হওয়ায় গরুর দাম বেশি চাচ্ছি। লাল মিয়া এবং কালো মিয়া দুটিকে বিক্রির জন্য ৪ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। তবে দামাদামি করে কম হলেও বিক্রি করে দেবেন ।লাল মিয়া এবং কালো মিয়াকে। মোঃ ফেরাস বলেন, আমার ছেলে পড়াশোনা শেষ করে। চাকরি বাকরি না হয় বিদায় সে দুটি গরু কিনে। এবং লালন পালন করেন আমার ছেলে। তার নাম শখ করে রাখছে লাল মিয়া এবং কালো মিয়া। সেই গরু দুটিকে আমরা অনেক কষ্টে যত্ন সহকারে লালন পালন করি। গরু দুটিকে ছোট থাকতেই অনেকে এসে বিক্রি করতে বলেছিল। আমরা দেই নাই। আমাদের খুব শখের জিনিস। আমি এখন কোরবানির ঈদে গরুটি বিক্রি করতে চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রতন কুমার ঘোষ বলেন, পড়াশোনা শেষ করে ওই সৌখিন খামারি প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে দুটি সুন্দর রোগবালাই মুক্ত বিশাল দুটি ষাঁড়ে পরিণত করেছেন। আমি আশা করছি কুরবানীতে তিনি ভালো দাম পাবেন। এবার উপজেলায় অসংখ্য খামারি কুরবানী ঈদের জন্য প্রায় ১৬ হাজার গরু প্রস্তুত করেছেন। উপজেলায় চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার গরু।
বাকি সাড়ে চার হাজার গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রংপুর রাজশাহী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গরু সরবরাহ করতে পারব। ভবিষ্যতে এ রকম গরু যদি কেউ পালন করতে চান প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।
এই সাইটে নিজম্ব খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।