রাখিবুল হাসান রাখিব মিঠাপুকুর
মানুষ মরণশীল। তবুও সুন্দর মায়াময় এই পৃথিবী ছেড়ে সহজেই কেউ মৃত্যুক বরণ করে নিতে চায় না। তবে জন্ম হলে মৃত্যু হবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। জন্ম আর মৃত্যুর ব্যবধান টাও মাত্র কয়েক সেকেন্ড মাত্র। মানুষ প্রতিনিয়ত জড় জাগতিক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। মানব মন মৃত্যু নিয়ে চিন্তা করবে এটাই স্বাভাবিক।
সিয়ামের ফেসবুক ওয়াল থেকে সংগ্রহীত, পিঁপড়ার আয়ুকাল নিয়ে জন্মাইয়া মানুষ,সুখ সংগ্রহ করতে করতে ফুরাইয়া ফেলে জীবন,আজ সেই বাণী চিরন্তন সত্যে রূপ নিলো সিয়ামের ফুটফুটে সুন্দর জীবনে।
সবে মাএ এডমিশন পরিক্ষা দিয়ে দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছিলো, হয়েছিলো নৌবাহীনে সৈনীক পদেও সিলেক্টেড, কিন্তু কয়েক সেকেন্ড এর ব্যাবধানে সব স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেল, সিয়াম ও সিয়ামের পরিবারের। বজ্রপাতে সিয়ামের মৃত্যু,তার সহপাঠীরা কোন ভাবেই মেনে নিতেই পারছে না, এইতো কয়েক মিনিট আগে তার সাথে কথা বললাম চা চক্র করলাম, বললো ভাই আসো, কলেজ মাঠে ফুটবল খেলা প্রাকটিক্স করি, এ কথা বলতে বলতেই কান্নায় চোখের জ্বলে বুক বাসিয়ে দিল, শাহ আলম, জাহিদ সহ অনেক সহপাঠীরা, তারা আর কোন দিন অতি আদরের ছোট ভাই, বন্ধু ভাতিজাকে কাছে পাবে না, হবে না আর কোন দিন একসাথে, ফুটবল খেলা, চা চক্র, বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা ও খুনশুটি।
ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শুকুরেরহাট কলেজ মাঠে সিয়াম (২২) নামে কলেজ পড়ুয়া যুবকের বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) সন্ধা ৬ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সিয়াম ময়েনপুর ইউনিয়নের গেনারপাড়া গ্রামের , শুকুরের হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোকছেদুল আলম মাস্টারের দ্বিতীয় ছেলে ।
সিয়ামের অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে কথা বললে জানতে পারা যায়, সিয়াম ছিলো একটু দুরন্তপনার স্বাভাবের, সিয়ামের স্বপ্ন ছিলো অনেক, আর সিয়ামকে নিয়ে পরিবারের ও স্বপ্ন ছিলো অনেক, সে লক্ষে পৌঁছে গেছলো সিয়াম। সিয়াম ছিলো কয়েক ভাই বোনের মধ্যে অনেক আদরের।
জানা গেছে সিয়াম পড়াশুনার জন্য রংপুর খামার মোড়ে অনেক দিন ধরেই ম্যাচে থাকে,নিজেকে স্বপ্নের গন্তব্য নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরলস ভাবে প্রস্তুত করতেছে, কয়দিন হলো ম্যাচে থেকে বাড়িতে আসছে, আর প্রতিদিনের ন্যায় সহপাঠীদের সাথে বিকাল বেলা শুকুরেরহাট স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ফুটবল খেলা প্র্যাকটিস করেন। প্র্যাকটিস করার সময় আকাশ ঘন কালো মেঘলা ও বৃষ্টি পড়তে শুরু করলে মাঠে থাকা সকল সহপাঠী খেলা বাদ দিয়ে মাঠের নিদিষ্ট এক জায়গায় চলে যায়।কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি একটু কমলে সিয়াম উঠে বল নিয়ে মাঠের দিকে আনুমানিক ১০/১৫ হাত এগোতেই বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে, এবং মাঠিতে পড়ে যায়।সাথে সাথে সহপাঠিরা সকলে এগিয়ে এসে স্থানীয় শুকুরেরহাট বাজারে হেলাল ডাক্তারে কাছে নিয়ে যায় । হেলাল ডাক্তার সিয়ামের অবস্থার সংকটাপন্ন দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেয় ।
পরে সিয়ামকে এম্বুলেন্স যোগে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।