আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, বিরোধী দলগুলো বাংলাদেশি কায়দায় বিক্ষোভ চালিয়ে তার হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাচ্ছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বেহালায় প্রাক্-স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মমতা। সেখান থেকেই আর জি করের ঘটনা এবং তার প্রতিবাদ আন্দোলন প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা বলেছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মমতা বলেন, মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআইএম) ও বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা কুক্ষীগত করতে বাংলাদেশের মতো বিক্ষোভ আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি ‘বাংলার অপমান’ করার জন্য বিরোধী দলের সমালোচনা করেন।
মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের মদদে বিজেপি ও সিপিআইএম পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাকে (পশ্চিমবঙ্গ) অবমাননা করার সমন্বিত উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। অনেকে ভাবছেন, বাংলাদেশের ঘটনা টেনে এনে এখানেও ক্ষমতা দখল করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আমি ক্ষমতার মায়া করি না। যতদিন বাঁচব, মানুষকে ন্যায়বিচার এনে দেব।
গত ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের গণবিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভের একপর্যায়ে পদত্যাগের পর ভারতে যান শেখ হাসিনা। এখনো সেখানেই আছেন তিনি।
ইতোমধ্যে কলকাতার হাইকোর্ট এ মামলার তদন্তভার কলকাতা পুলিশ থেকে গোয়েন্দা বিভাগ সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ পরিস্থিতিতে মমতা কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আপনাদের এখন কাজে ফিরে আসতে হবে। আমার সরকার সিবিআইকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। আমরাও চাই এ বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হোক।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে এক ধরনের ‘অশুভ প্রচারণা’ চলছে।
তিনি বলেন, আমরা মামলার তদন্তে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা তার সবই করেছি। তা সত্ত্বে এক ধরনের অশুভ প্রচারণা চলছে। আপনারা আমাকে অবমাননা করতে পারেন, কিন্তু রাজ্যের অবমাননা করবেন না।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ভোররাতে আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক জুনিয়র চিকিৎসকের (৩১) ধর্ষণ-হত্যার পর ভারতজুড়ে চলছে চিকিৎসকদের ধর্মবিরতি ও গণবিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি হলো দায়ীদের আটক করে দ্রুত বিচার করা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য আইন প্রণয়ন।
এই ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে রাস্তার বিক্ষোভ গতকাল রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শুরু হয়; যা কলকাতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাসহ অন্যান্য ছোট ও বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।