নিজস্ব প্রতিবেদক:
কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক, করপোরেট গ্রাহক ও সাধারণ আমানতকারীদের কাছ থেকে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তহবিল সংগ্রহ বেড়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে আমানত প্রবাহও বেড়েছে।
একই সঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে টাকার জোগানও বেড়েছে। তবে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংক এখনো বড় ধরনের তারল্য সংকট মোকাবিলা করছে।
সূত্র জানায়, গত সরকারের আমলে দখল করে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয় কয়েকটি ব্যাংকে। যে কারণে ১১টি ব্যাংকে তারল্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। সংকটের কারণে তারা গ্রাহকদের আমানতের টাকাও চাহিদা অনুযায়ী দিতে পারছে না।
ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট মোকাবিলা করতে গত রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে ৯ হাজার ২৬১ কোটি টাকা তারল্যের জোগান দিয়েছে। এর মধ্যে আগের ধার বাবদ সমন্বয় করা হয়েছে ৬ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংকগুলো নিট নিয়েছে ২ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। সুদের হার ছিল সাড়ে ৭ থেকে সাড়ে ১০ শতাংশ। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলো ধার নিয়েছে সোয়া ৩ থেকে ৪ শতাংশ সুদে।
একই দিন কলমানি মার্কেট ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে স্বল্প ও মেয়াদি ধার হিসাবে নিয়েছিল ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
মঙ্গলবার কলমানি মার্কেট ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে স্বল্প ও মেয়াদি ধার হিসাবে নিয়েছে ৩ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। এতে সর্বোচ্চ সুদ হার ছিল সাড়ে ১০ শতাংশ। স্বল্প মেয়াদি ধার নিয়েছে সর্বোচ্চ পৌনে ১৩ শতাংশ সুদে।
এদিকে আন্তঃব্যাংক ডলারের বাজারেও লেনদেন বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার লেদেন হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের জোগান বেড়েছে। যে কারণে ব্যাংক থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে টাকার জোগান দিচ্ছে। চলতি মাসের প্রথম ১৪ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৬ কোটি ডলার। ফলে চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত মাসের চেয়ে বেশি হবে বলে ধারণা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত মাসে এসেছিল ২২২ কোটি ডলার। রেমিট্যান্স বাড়ার কারণেও ব্যাংকে তারল্যের প্রবাহ বাড়ছে।
এছাড়া সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো করপোরেট গ্রাহকদের কাছ থেকে চড়া সুদে আমানত নিচ্ছে। সাধারণ আমানতকারীদের কাছ থেকেও ব্যাংকগুলো চড়া সুদে আমানত নিচ্ছে। ফলে ব্যাংকগুলোতে আমানত প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে।
আগস্টে অস্থিরতা থাকায় ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা টাকা তুলে ঘরে রাখার প্রবণতা বেশি ছিল। এখন সে প্রবণতা কমেছে। ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ তুলে নেওয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। একই সঙ্গে আগে যেসব অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে। অস্থিরতার কারণে তুলে নেওয়া হয়েছিল ৭০ হাজার কোটি টাকা।