ডেস্ক রিপোর্ট
গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ২৫ দিনে বিএনপির মহাসমাবেশ পরবর্তী হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে ৩১০ স্থানে ভাঙচুর ও ৩৭৬ জায়গায় অগ্নিসংযোগের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। এ সময় বিভিন্ন ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. মনজুর রহমান এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সদরদপ্তর জানায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের পরদিন থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ৩৭৬টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ২৯০টি যানবাহন ও ১৭টি স্থাপনা রয়েছে। একই সময়ে ২৭৫টি যানবাহন ও ২৪টি স্থাপনাসহ ৩১০টি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত রেলওয়েতে ২৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া গত ২ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলায় আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর, ৫ নভেম্বর পিরোজপুর এবং ৬ ও ১৫ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের দুটি অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুবৃর্ত্তরা।
মো. মনজুর রহমান আরও জানায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের সময় ২৯ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় অবরোধ ও হরতালের সময় পিকেটিং ও অগ্নিসংযোগ করাকালে ৬টি ঘটনায় হাতেনাতে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের অনেকেই নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ভাঙচুর ও নাশকতামূলক হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ পুলিশ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া অবরোধ-হরতালে পরিবহন বা স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগকারীদের উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরিয়ে দিলে অথবা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।
আরও পড়ুন:বিএনপি-জামায়াত নাশকতা করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে এ্যাডঃ- জামাল হোসেন মিয়া
উল্লেখ্য, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষটি বিস্তৃত হয়ে বিএনপির সমাবেশের কাছে চলে আসে এবং একপর্যায়ে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয় এবং পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
ভয়াবহ এই সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য ও একজন রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ৪১ জন পুলিশ সদস্য ও ২৮ জন সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হয়েছেন। পুলিশের হিসাবে, ৫৫টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স পোড়ানোর পাশাপাশি প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।
এসব ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ৬৬টি মামলা করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে দলটির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতাকে। এরপর মহাসমাবেশ পণ্ড ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর থেকে দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত।