মেহেদী হাসান সুমন
রংপুর-৪ আসনের এমপি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি’র প্রতি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনীহা প্রকাশ করছেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মীসহ সচেতন মহল।ফলে ওই আসন থেকে এ পর্যন্ত ৪ জন নেতা নমিনেশন ফরম তুলেছেন।
নেতাকর্মীরা বলেছেন, টিপু মুন্সি এই আসন থেকে তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বানিজ্য মন্ত্রী হলেও এই এলাকায় তেমন কোন উন্নয়ন করতে পারেননি তিনি। সেই দিক থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম (মায়া) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে এই অবহেলিত এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যা করছেন তা সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক।
তবে সেক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্যান্য প্রার্থীরাও কোনো অংশে কম নয়,তারা সকলেই নেতৃত্ব দেয়ার মতোই যোগ্য নেতা।
রংপুরের এই ৪ (চার) আসনটি পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন মিলে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ জন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা হয়, কাউনিয়া সারাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলামের। তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রতিবেদককে বলেন,কাউনিয়া উপজেলায় ছয়’টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি চেয়ারম্যানেই আওয়ামী নেতৃবৃন্দ। এদের অনেকেই বানিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সির প্রতি অনীহা প্রকাশ করছেন।
এছাড়াও কথা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদবাগ ইউপি চেয়ারম্যান
আলহাজ্ব আব্দুল হান্নান,টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদল ইসলাম, বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী ও কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল মজিদসহ হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রাজু আহমেদের সাথে। তারা সকলেই দলীয় নমিনেশন প্রাপ্ত নৌকার মাঝির হয়ে নির্বাচনী কাজ করলেও তবে মৌন সমর্থন রয়েছে আনোয়ারুল ইসলাম (মায়া’র) প্রতি।
তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলেন, এই এলাকায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উন্নয়নের বড় অংশ হচ্ছে গৃহহীনদের বসতবাড়ি । সেই কাজে মানবসেবায় অগ্রহণী ভূমিকা রেখেছেন আনোয়ারুল ইসলাম মায়া। তিনি ১ হাজার পরিবারকে দুই শতক করে ২ হাজার শতক জমি গৃহহীনদের দলিল করে দেন। আর সেই জমির উপরে ঘর নির্মাণ হয় প্রধানমন্ত্রীর।
শুধু তাই নয় এই আসন জুড়ে প্রায় ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দিয়েছেন আনোয়ারুল ইসলাম মায়া। মায়াকে দলীয় মনোনয়ন দিলে এই অঞ্চলের মানুষদের ভাগ্য আরো পরিবর্তন হবে বলে কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা তাদের।
অপরদিকে পীরগাছা উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মধ্যে ৩ জনেই আওয়ামীলীগের নেতা। তাদের মধ্যে প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় অনেকের । তারা বলেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৮ নেতা মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন।
এদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল, কাউনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া, বিশিষ্ট আইনজীবী রফিক হাসনাইন, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন। এদের সকলেই বেশ শক্তিশালী প্রার্থী। সবচেয়ে বড় সমস্যা দলীয় কোন্দল। বিশেষ করে কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। সেখানে দলীয় কোন্দল চরম আকারে ধারণ করেছে।
যা নির্বাচনের আগে কোন্দল মেটানোর কোনও উদ্যোগ সফল হয়নি। তাছাড়া টিপু মুনশির নিজ উপজেলা পীরগাছায় বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি বেশ শক্তিশালী। ফলে শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পেলেও জয়ী হতে ঘাম ঝরাতে হবে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সবকিছু মিলিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি দলের মনোনয়ন পেলেও সহজভাবে জয়লাভের সম্ভাবনা একেবারেই নেই। বরং কঠোর লড়াই করে জয়ী হতে হবে বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।