জহিরুল ইসলাম ঝিকরগাছা সংবাদদাতা, যশোর
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে চলমান শৈত প্রবাহ, ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির আশংকায় ফুল চাষীরা।
গদখালী, নাভারন ও পানিসারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় দুইশ বিঘা জমির গোলাপ পুরোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আরও বেশ কিছু জমি আক্রান্ত হয়েছে। কয়েকদিনের কুয়াশায় অধিকাংশ গোলাপ ও গাঁদা ক্ষেতের ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া শীতে অসুবিধা না হলেও কয়েকদিনের ঘন কুয়াশায় গোলাপ ও গাঁদা ফুলগাছের ফুল, ডগা পচে যাচ্ছে । পাতা ঝরে যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে পানিসারা ইউনিয়নের টাওরা গ্রামের ফুল চাষীরা।
উপজেলার টাওরা গ্রামের ফুল চাষী মোহর বলেন মাঝে যে বৃষ্টি হয়েছিলো মূলত তারপর থেকেই গোলাপ গাছ এ রোগ দেখা দিয়েছে। শীতে ফুল চাষের তেমন ক্ষতি হয়না। কিন্তু কুয়াশার কারণেও ফুল নষ্ট হচ্ছে। সোহাগ হোসেন নামে এক চাষি বলেন, আমার ১ বিঘা জমির গোলাপ পঁচা লেগে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
কোন কীটনাশক এ কাজ হচ্ছে না। কোন কিছুতই যেনো কাজ হচ্ছে না, মনে হচ্ছে ফুলেও করোনা ভাইরাস লেগেছে।
তিনি বলেন, তার গোলাপ বাগানের ফুল পচে যাচ্ছে। কান্ড পঁচে যাচ্ছে। গোলাপের পাতা ঝরে যাচ্ছে। তিনি বলেন আমরা ফুল চাষীরা ১৪ ফেব্রুয়ারী ও ২১ ফেব্রুয়ারীই আমাদের ফুল বেচাকেনার প্রধান উৎসব, এবছর মনে হয় না চাষীরা লাভবান হবে, কারন বেশি আর কম সবারই ফুলে পঁচা লেগেছে।
ফুল চাষী কামারুল ইসলাম বলেন, গোলাপ ফুলই আমার একমাত্র আয়ের উৎস, আমাদের ফুল বেচাকেনার প্রধান উৎসব হচ্ছে ভালবাসা দিবস, ফুল পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবার দাম বাড়তে পারে।
পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, ফুলচাষে শীতের সময় সাধরণত তেমন কোন সমস্যা দেখা দেয় না। কয়েকদিনের ঘন কুয়াশায় অনেক চাষির গোলাপ গাছের পাতা ঝরে যাচ্ছে।
কুয়াশার কারণে সব ধরনের ফুলক্ষেতে ভাইরাস লাগছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ফুল সংকট দেখা দিতে পারে।
গদখালী ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্লাউয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশার কারণে সব ধরনের ফুল ফোটা কম দেখা যাচ্ছে। এছাড়া ফুলে স্পট দেখা দিয়েছে। এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলের উৎপাদন কম হবে। এর ফলে বাজারে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি। দামও বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি।
টাওরা, নীলকন্ঠ নগর গ্রামের উপসহকারী কৃষি অফিসার অর্ধেন্দু পাড়ের কাছে সরেজমিনে এসে ফুলের ভুই দেখে পরামর্শ দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও তিনি আসেন নাই। চাষীদের অভিযোগ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সময় মত কোন পরামর্শ প্রদান করেন না।
চাষীদের একটাই চাওয়া সরকারি ভাবে ফুল চাষীদের সুবিধা অসুবিধা গুলো পর্যবেক্ষণ করা। চাষিরা যেনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।
এই সাইটে নিজম্ব খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।