আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একটি হাসপাতালে ভয়াবহ হামলার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। এমন অবস্থার মধ্য বুধবার স্থানীয় সময় সকাল এগারোটার দিকে তেল আবিবে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
চলমান যুদ্ধ কোনদিকে মোড় নেয়, সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক মহলের। এতোদিন মুখে সংঘাত নিরসনের কথা বললেও, অস্ত্র পাঠিয়ে যুদ্ধ উস্কে দেয়ার অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ। তবে স্থল অভিযান শুরুর উত্তেজনার মাঝে এ সফর বড় ধরনের সংঘাত থামানোর প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন অনেকে। অবশ্য অনেকেই বলছেন, সংঘাত থামাতে নয়, গাজায় স্থল অভিযানে একাত্মতা প্রকাশ করতেই ইসরায়েল যাচ্ছেন বাইডেন।
যুদ্ধ শুরুর দশ দিন পার হলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব বিশ্বের কূটনৈতিক তৎপরতা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। গাজার বেসামরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ত্রাণ সহায়তা চালু কিংবা জিম্মিদের মুক্তির কোনো পদক্ষেপই সেভাবে কাজে আসেনি। সংকটময় পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই সফর কী বার্তা বহন করে, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
ওয়াশিংটন বলছে, ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্তের পাশাপাশি গাজার বেসামরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মানবিক সহায়তা চালুর বিষয়ে আলোচনা করবেন বাইডেন। নেতানিয়াহু ও আরব বিশ্বের নেতাদের সাথে জর্ডানে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন তিনি।
ইইউ এর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, আমার মনে হয়, মিসর ও আরব বিশ্বের নেতাদের সাথে ছোট পরিসরে বৈঠকে অংশ নেবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথেও আলোচনায় বসতে পারেন তিনি। ইসরায়েল এবং জর্ডানে তার এই সফর আবশ্যক হয়ে উঠেছে। মানবিক করিডোর খুলে দেয়ার মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ সহায়তার বার্তাও তিনি দেবেন বলে মনে হয়।
অনেকেই বলছেন, বাইডেনের এ সফর হতে যাচ্ছে বড় ধরনের সংঘাত রুখে দেয়ার প্রচেষ্টা। কেননা এরইমধ্যে ইসরায়েল-হামাসের এই যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই দফায় স্থল অভিযান বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবেন বলেই ধারণা অনেক বিশ্লেষকের।
ইসরায়েল সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই সফরের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ এই অঞ্চলে সার্বিক পরিস্থিতি ও আসন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন বাইডেন।
অবশ্য যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের প্রতি ঢালাও সমর্থন এবং যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে বাইডেন প্রশাসন। ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ উস্কে দেয়ার অভিযোগ তুলছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইরানসহ বহু দেশ।