মো: মজিবর রহমান শেখ,
নিত্যপণ্যের যখন দাম ঊর্ধ্বগতি তখন অনেক সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রই বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতে অক্ষম।
রমজান মাসের শুরু থেকেই বাজারে নিত্য পণ্য জিনিসগুলোর দাম ঊর্ধ্বমুখী। আর এই দামে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
যার মধ্যে নির্ময়ের মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। সমাজে এরকম অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা, মানুষের কাছে হাত পেতে কোন কিছু চাইতেও পারে না এবং এই রমজান মাসে একটু স্বাচ্ছন্দ করে খেয়ে রোজা রাখবে সেই অবস্থাও তাদের নেই । যার ফলে তারা মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করে এভাবেই রমজান মাস পালন করে যাচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন সেরকমই ১০০ টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এরকম ১০০ টি পরিবারকে রমজান মাসের ১৫ দিনের বাজার করে দিয়েছে ঠাকুরগাঁও এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন।
সমাজে যারা একেবারে গরিব তারা যেকোনো সময় মানুষের কাছে হাত পেতে যেকোন কিছু চাইতে পারে কিন্তু সমাজে এরকম কিছু মানুষ রয়েছে যারা মানুষের কাছে হাত পেতে কোন কিছু চাওয়া সম্ভব নয় এবং বর্তমান সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেশি হওয়ার ফলে ক্রয় করে খাওয়ার সক্ষমতাও তাদের নেই।
এমন সব ১০০টি পরিবারকে ঠাকুরগাঁও এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়ন ১৫ দিনে বাজার করে দেয়। বাজার পৌঁছে দেওয়ার সময় তারা কোন প্রকার ছবি বা ভিডিও করেনি।
তারা এমন পরিবারের কাছে বাজার পৌঁছে দিয়েছেন যারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না। আবার ভালো করে ১৫ টা দিন রমজান পালন করবে সেই সমর্থ্য নেই এমন সব পরিবারকে বাজার করে দিয়েছে।
এই বাজারের মধ্যে রয়েছে খেজুর, চাল, ডাল, চিনি ,লবণ, তেল সহ ১০ প্রকারের। গভীর রাতে যখন সবাই ঘুমের মধ্যে তখন এক্স ক্যাডেট সদস্যরা তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ১৫ দিনের বাজার পৌঁছে দেয়। যেন রাতের আঁধারে কেউ না বুঝতে পারে তাদের এই বাজার কে করে দিয়েছে ।
তাছাড়া তারা কারো কাছ থেকে বাজারের সহযোগিতা নিয়েছে এটা যেন কেউ না বুঝতে পারে। বাজার হাতে পেয়ে মোঃ কামাল বলেন, সবাই আমরা অনেকেই দেখি যে ইফতারের এক প্যাকেট ইফতারি দিয়ে থাকে কিন্তু এক্স ক্যাডেট একেবারেই ব্যতিক্রমে এই আয়োজন করেছে ।আমাদের ১৫ দিনের যে বাজার সেই বাজার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এই বাকি ১৫ দিন আমরা যেন সুখের শান্তিতে রোজা পালন করতে পারি সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
এক্স ক্যাডেট এসোসিয়েশনের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ।সমাজের সবাই যদি এরকম অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো বা আমাদের মতন মানুষ যারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারি না তারা একটি হলেও বাচ্চাদের নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে পারবো।
ঠাকুরগাঁও এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন সদস্য নুর আফতাব রুপম বলেন, এক্স ক্যারেট অ্যাসোসিয়েশন ঠাকুরগাঁও ইউনিট আমরা সবার কাছেই দোয়া চাই। আমরা যেন এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি ।প্রতিবারই রমজানে আমরা এরকম ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করে থাকি।
সেই ভাবে এবারেও আমরা এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করেছি। যেহেতু বর্তমান প্রত্যেকটা জিনিসের দাম অনেক ঊর্ধ্বগতি। যারা নির্ণয়ের মানুষ রয়েছে তারা তাদের পরিবার নিয়ে খুব কষ্ট করে এ রমজান পালন করতেছে । তাদের এই কষ্টের ভাগ নেওয়ার জন্যই আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
সমাজে যারা বিত্তবান মানুষ রয়েছে তারা যদি আমাদের সাথে যুক্ত হতো তাহলে আমরা পুরা মাস ব্যাপী তাদেরকে খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে পারতাম।
এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো: জবাইদুল হক (স্বপন) বলেন, আমরা রমজান মাসে আসলেই অনেকেই দেখি শুধু ইফতারের সময় একবালা ইফতার করাতে কিন্তু অনেকেই রমজান মাসে সেহরির খাওয়ার ভালো সামর্থ্য নেই। তারা যে ভালো করে সেহরি খাবে সেই ব্যবস্থা থাকে না। তাই আমরা সেহরি এবং ইফতারি ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
১০০টি পরিবারের ১৫ দিনের বাজার করে দিয়েছি যেন ঈদ পর্যন্ত তারা একটু স্বাচ্ছন্দে রমজান মাসকে পালন করতে পারে। আমাদের এই উদ্যোগে ঠাকুরগাঁও জেলা এক্সিডেন্ট এসোসিয়েশনের সকল সদস্য যারা সহযোগিতা করেছে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
এছাড়াও যারা এই অনুষ্ঠানে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ । প্রতি রমজান মাসে আমরা এরকম প্রোগ্রাম করে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা ১০০ টি পরিবারের কে ১৫ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
এ সময় এক্স ক্যাডেটের সভাপতি জাকির হোসেন রুবেল বলেন, আমরা যতটুকু জানি যে গরিবদের অনেকে সহযোগিতা করে কিন্তু সমাজে অনেক মানুষ রয়েছে এমন যারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না।
তারা মূলত তাদের পরিবার নিয়ে অনেক কষ্ট করে চলে। তাই আমরা সদস্যরা একটি পরিকল্পনা করি যারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারেনা কিন্তু খুব কষ্টে তাদের জীবন যাপন করতেছে তাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য।
এ বাজার মধ্যে আমরা ১০ প্রকার খাবার রেখেছি যেন ১৫ দিন তারা একটু স্বাচ্ছন্দ্যে রমজান মাস পালন করতে পারে।
আমরা তার পাশাপাশি সমাজের যারা বিত্তশালী রয়েছে তারা যদি আমাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়তো বা আরো বেশি পরিবারকে আমরা সেই খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে পারবো।