ইব্রাহিম খলিল চৌধুরী চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে অদ্য ৫ মে ২০২৪ রবিবার চট্টগ্রাম নগরীর সার্কিট হাউজ মোড়ে এক বিশাল শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি এম নুরুল হুদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো আলাউদ্দিন মাঝি এর পরিচালনায় এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাশঁখালী উপজেলা শাখা নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: আসগর হোসেন তালুকদার, পতেঙ্গা থানা জাহাজী ফেডারেশনের সভাপতি হাসান বাদশা, আওয়ামী লীগ নেতা লিটন চৌধুরী, এ টি এম সেলিমুর রহমান, জসিম উদ্দিন, মো: শামসুল ইসলাম, কণ্ঠশিল্পী মো: হানিফুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক কর্মী মো: তিতাস, সাংবাদিক সুমন বড়ুয়া, ইমরান সোহেল, নুরুল আজম, আসিফ ইকবাল, চট্টগ্রাম বিভাগীয় জল পরিবহন কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন হোসেন মন্জুর, চট্টগ্রাম জেলা নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সহ সভাপতি মো: ইদ্রিস মোল্লা, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো: নুরুল হোসেন, নুরুল ইসলাম মহাজন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: জাফর, মো: সাইফুল ইসলাম নুর সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ হারুন রশিদ মাষ্টার, জামাল সুকানী সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, হাছান সুকানী- সহ কোষাধ্যক্ষ, জামাল সুকানী- সহ কোষাধ্যক্ষ, মো: ফারভেজ সুকানী- দপ্তর সম্পাদক, আব্দুল রাজ্জাক সুকানী (রাজু)- সহ দপ্তর সম্পাদক, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর- সহ দপ্তর সম্পাদক, মো: ফরহাদ মাস্টার (১ম শ্রেণি)- আইন বিষয়ক সম্পাদক, দিদার আলম- সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক, ওমর ফারুক (রানা)- সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক, মো: সুমন ড্রাইভার- প্রচার সম্পাদক, ইব্রাহিম (কালু)- সহ প্রচার সম্পাদক, ইলিয়াস সুকানী- সহ প্রচার সম্পাদক, মো: তসিল সুকানী- সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক, মো: জয়নাল আবেদীন- ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, মো: রুবেল- সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, রেদওয়ান সুকানী- শ্রম বিষয়ক সম্পাদক, রিয়াজ উদ্দীন সুকানী- সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক, আলমগীর সুকানী- সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক, রাশেদুল ইসলাম মাস্টার (১ম শ্রেণি)- ক্রীড়া সম্পাদক, আলী আজগর- সহ ক্রীড়া সম্পাদক, মো: রাসেল সুকানী- সহ ক্রীড়া সম্পাদক, কার্যকরী সদস্য যথাক্রমে মো. রাজীব সুকানী, মো: মনির মাঝি, মো: সালাউদ্দীন, মো: দিদার আলম সুকানী, মো: কামরুল, মো: মামুন সুকানী, নুর আলম মিস্ত্রী, আলাউদ্দিন মিস্ত্রী, মো. নুরুল ইসলাম, আবু মনছুর, পিন্টু সাহা, মো. সবুজ, রবিউল আলম রবি ও আব্দুস সাত্তার সুকানী, বৈদ্যুতিক শ্রমিক মো: হারুন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় বক্তারা জানান রক্তঝরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দাবি বাংলাদেশে আজও পরিপূর্ণ মাত্রায় বাস্তবায়ন হয়নি।
শুধু তাই নয় ব্যক্তিমালিকানাধীন শিল্প সেক্টরে শ্রম আইন অনুযায়ী ৮ ঘন্টা শ্রম দিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, মাসের ১০ তারিখের মধ্যে মজুরি পরিশোধের আইন থাকলেও মালিকরা তা মানে না আবার সরকারও তা বাস্তবায়নে কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহণ করে না। এছাড়া হোটেল সেক্টর, গার্মেন্টস, নৌ-যান, নির্মাণ ও পরিবহন সেক্টরে ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের নিয়ম উপেক্ষিত। আর জাতীয় মজুরি কমিশন ও নিম্নতম মূল মজুরি না থাকায় সেক্টর ভিত্তিক গেজেটের ক্ষেত্রে সরকার ও মালিকসহ মালিকগোষ্ঠির মনোনিত শ্রমিক প্রতিনিধি নির্বাচন করে বিভিন্ন সেক্টরে যে গেজেট প্রকাশ করা হচ্ছে তা মালিকগোষ্ঠির স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এমনই এক বাস্তবতায় পালিত হচ্ছে বাংলাদেশে ১৩৯তম মহান মে দিবস, তাই আজ প্রয়োজন মজুরি কমিশন গঠন ও জাতীয় নিতœতম মজুরি ঘোষণা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, কর্মক্ষেত্রসহ সার্বিক সামাজিক নিরাপত্তার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলা।
আর তার জন্য প্রয়োজন শ্রেণি সচেতন নেতৃত্ব, সংগঠন ও লাগাতার সংগ্রাম। এছাড়াও নেতৃবৃন্দ বলেন, গার্মেন্টস শিল্পকে সামনে রেখে এদেশের শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে চলছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত। মে দিবসের রক্তঝরা সংগ্রামের গতিপথেও ছিল এমনি ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত। কিন্তু শ্রমিকদের একতা আর সংগ্রামের কাছে সরকার ও মালিকপক্ষ বৈঠক করে আলোচনা বসে যৌক্তিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সম্মত হয়।
বাংলাদেশে তার সাম্প্রতিক উদাহরণ হচ্ছে নৌ-যান সেক্টরে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন আর হোটেল সেক্টরে মে দিবসে সর্বাত্মক ছুটি ভোগের আন্দোলন। মে দিবসের শিক্ষা হচ্ছে ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের সংগ্রামকে শ্রেণি বৈষম্য উচ্ছেদের লক্ষ্যে অগ্রসর করা। একই সাথে সম্ভাব্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের লক্ষ্যে বাজার পুনর্বন্টন নিয়ে সাম্রাজ্যবাদিরা যে প্রস্তুতি ইউক্রেনকে নিয়ে মার্কিন নেতৃত্ব ন্যাটোর সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ, প্যালেস্টাইনে মার্কিনের মদদে ইসরায়েলের ধারবাহিক আগ্রাসন, গণহত্যা, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে মার্কিন-চীন যুদ্ধ প্রস্তুতি এর বিপরিতে বিশ্ব শ্রমিকশ্রেণিকে পাল্টা প্রস্তুতি নিয়ে বিশ্ব বিপ্লবের লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হবে।
সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ৮ ঘন্টা শ্রম দিবস, গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের বাস্তবায়নের জন্য দরকার জাতীয় ভিত্তিক ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন। সেক্ষেত্রে পুঁজির শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আর সমালোচনার স্বাধীনতার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরীর সার্কিট হাউজ মূখ থেকে শুরু হয়ে দামপাড়া আলমাস সিনেমা মোড় হয়ে কাজীর দেউরি ঘুরে আবার সার্কিট হাউজ মোড়ে এসে শেষ হয়।