বাবুল রহমান রবিন গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও পিচ ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) গাইবান্ধার উদ্যোগে রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১১ টায় গাইবান্ধার গানাসাস মার্কেটের সামনে এ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চক্রবর্তী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবীর তনু, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের জেলা আহবায়ক বিপুল কুমার দাস, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক শামীম আহমেদ পলাশ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ফরহাদ আলী, দুর্বার নেট ওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মাজেদা খাতুন, জেলা বারের সদস্য এ্যাড. মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, এ্যাড. ফারুক কবীর, মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইয়াসমিন খাতুন, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের নেতা মনির হোসেন সুইট, শিক্ষক অশোক সাহা, সাকোয়াত হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ছাত্র-জনতা অভূতপূর্ব আন্দোলন যেন কোনোভাবেই ভুলণ্ঠিত না হয়, সেদিকে সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুধু একটি সরকারের পরিবর্তন চায়নি, চেয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমুল পরিবর্তন। পরমত সহিষ্ণুতার বার্তা ও বৈচিত্র্যতার মাঝে ঐক্যের চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশকে সংঘাতহীন ঐক্যের মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে নতুনভাবে সংস্কার করে এগিয়ে নিতে হবে। কোনো প্রকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, কিংবা ব্যক্তি স্বার্থে কারও ওপর হামলা, মামলা, প্রতিষ্ঠান লুটপাট করা যাবে না, কারো ক্ষতিসাধন করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
২৪ আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবী গাইবান্ধায় নারী মুক্তি কেন্দ্রের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ ৪ঠা আগস্টকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবীতে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র গাইবান্ধা জেলা শাখার উদ্যোগে শনিবার শহরের ১নং রেলগেট এলাকায় এক নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সাধারন স¤পাদক অ্যাড নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাহেলা সিদ্দিকা, আফরোজা সুলতানা ,শিল্পী আক্তার, কলি রানী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন ১৯৯৫ সালের এই দিনে দিনাজপুরের কিশোরী ইয়াসমিন কে একদল পুলিশ পৈশাচিকভাবে গণধর্ষণ করে হত্যা করে। প্রতিরোধ গড়ে ওঠে দিনাজপুরসহ সারাদেশে। আন্দোলন সংগ্রামে পুলিশের গুলিতে অনেকে শহীদী মৃত্যু বরণ করে এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়।
শহীদদের স্মরণ ও সেই চেতনাকে ধারন করে সেদিন সম্মিলিত নারী সমাজ এই দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ হিসাবে ঘোষনার দাবি জানান। সেই দাবি আজও অপুরিত। বক্তারা অবিলম্বে এই দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবসের ঘোষণার দাবী জানান। এছাড়া ডাঃ মৌমিতা-তনু-মুনিয়া – নুসরাতসহ সকল খুন-ধর্ষনের বিচার। এবং ঘরে বাইরে, গণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীর উপর যৌন ও সহিংস আক্রমণ বন্ধ সহ মাদক -জুয়া-পর্নোগ্রাফি, নাটক-সিনেমা – বিজ্ঞাপনে নারী কে পন্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ, নারী-শিশু নির্যাতন-হত্যা ও মৌলবাদ-সা¤প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান। সেইসাথে জুলাই হত্যাকান্ডের বিচার, বন্যা দূর্গত এলাকায় নারী -শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বন্যার্ত এলাকাগুলোকে দ্রুত দূর্গত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান।