নিপুন জাকারিয়া :-
বুক চাপা শতকষ্ট নিয়েও দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জননেতা এডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন। সর্বশক্তি সম্পন্ন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও বারবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে সারাদেশে বিএনপি যখন নিস্তেজ হয়েছিলো ঠিক ততটা সময় ধরে জামালপুরে বিএনপির সকল কর্মসূচি শক্ত হাতে সফল করেছেন তিনি। সরকার দলীয় নানান গায়েবি মামলা ও হামলার শিকার হয়েও আন্দোলন সংগ্রামে অটল ভূমিকা রেখেছেন আপোষহীন ভাবে এ নেতা। জেল জুলুম হুলিয়া মাথায় নিয়ে সারা জেলায় বিএনপির রাজনীতি সুসংগঠিত করেছে এডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন।
জামালপুর জেলা বিএনপির একমাত্র কান্ডারী হিসেবে এডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে একাধিকবার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। কুড়িয়েছেন অজস্র সুনাম। দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রিয় এই মানুষটির ডাকে সাড়া দিয়ে জামালপুর জেলা বিএনপি আজও ঐক্যবদ্ধ।
অনেকের ধারনা স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মূলে একটা কারণ হলো হাইব্রিড কিংবা নব্য আওয়ামী লীগাররা। তেমনি জামালপুর জেলা জুড়ে দৌরাত্ব রয়েছে কথিত বিএনপির নেতাকর্মীদের। যারা আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন সময়েও তাদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। ভূমিদস্যুতা, দখল বানিজ্য থেকে শুরু করে সব অপকর্মে ছিল তাদের পদচারনা। শহরের সমস্ত মজুদদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে তারা গড়েছে শক্ত সিন্ডিকেট। যা বর্তমানে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে কালোছাঁয়ার সৃষ্টি শুরু করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মী জানান, বিএনপির দুঃসময়ে যেসব নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের সাতে আঁতাত করে চাকুরি ঠিকরাখা, ভূমিদস্যুতা, দখল বাণিজ্যসহ ঠিকাদারী, বাজার সিন্ডিকেট করে সরকার দলের সকল সুবিধাভোগ করেছে তারাই এখন বিএনপির ক্ষতির জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। প্রতিনিয়ত দলের মধ্যে কোন্দল ঢুকানোর অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে অনেকটা বিরোধী দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মতো।
তারা আরও বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের সাথে মুখোশধারি ঐসব বিএনপির নেতাকর্মীদের ছিল ঘনিষ্টতা। বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের একত্রিত কর্মযজ্ঞের বিভিন্ন ছবি ভাইরাল হযেছে যা সকলেরই জানা। বিএনপির মতার্দশের হয়েও এসব নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের সুরক্ষা কবজ হয়ে কাজ করেছে বলেও দাবি তাদের।
আওয়ামী লীগের লুটেরা বাহিনীর সাথে আঁতাত করে চলাসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বিভিন্ন সময় বহিস্কৃত কতিপয় নেতাই এখন জামালপুর জেলা বিএনপি’র সুসংগঠিত পরিবারে বিষ ঢালতে শুরু করেছে। নিজ দলের কথা চিন্তা না করে কোন এক প্রভাবশালী নেতার সান্নিধ্যে পেশি শক্তি প্রয়োগের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে একটি মহল। সরকারি কিংবা বিরোধী দল যে অবস্থাতেই তারা থাকুক দলীয় লোকদের সাথে বিনিময় করে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলে বদ্ধ পরিকর।
বিএনপির একাধিক কর্মীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন মাইকিং এবং প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহবান জানান। ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী লীগের সুবিধা নেওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কতিপয় বিদ্রোহী নেতাদের কেউ মসজিদের মার্কেট বেদখল, কেউ নগদের ব্যবসা, ঠিকাদারি ব্যবসা বিভিন্ন ব্যবসা বেদখলে ব্যস্ত ছিলেন। তারাই এখন জেলা বিএনপির বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। জননেতা মামুনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মাঠে নামা বিদ্রোহীদের বিগ বাজেটে মাঠে নামিয়েছেন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের এক নেতা। ওই নেতা বিগত কয়েক বছরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ করেছেন।
দলটির তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সুবিধা নেওয়া বিদ্রোহী এসব নেতাদের বিরুদ্ধে কখনো মামলা হয়নি। তারা চাকুরিসহ চুটিয়ে ব্যবসা করলেও বিএনপির ত্যাগী নেতারা গত ১৭ বছরে একদিনও বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। বিপদগ্রস্ত এসব নেতা-কর্মী-সমর্থকদের পাশে ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন।
বিএনপির তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে থাকা জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুনের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছে কিছু কথিত বিএনপির নেতাকর্মী। দুই নৌকায় পা দিয়ে থাকা এসব নেতাকর্মী কালো টাকার ক্ষমতায় হতে চান ক্ষমতাসীন।
শুধু মূল দল নয়, বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দলের মধ্যেও প্রকাশ্যে কোন্দল তৈরী করছে তারা।
অভিযোগ উঠেছে, জামালপুরে আধিপত্য বিস্তারে নিজের অনুসারীদের নেতৃত্বে আনতে মরিয়া কেন্দ্রীয় এক নেতা। তারই ধারাবাহিকতায় সুবিধাবাদীরা সিঁড়ি খুঁজছে শীর্ষ নেতৃত্বে যাওয়ার। এই সুবিধাভোগীদের যাতাকলে পিষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দলের যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের। যা আগামী দিনের আন্দোলন কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে দাবি জেলা বিএনপির নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের।