বিল্লাল হুসাইন
যশোরের ঝিকরগাছায় নতুনহাট পাবলিক কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশের অভিযানে অভিযুক্ত ধর্ষক মেহেদী হাসান সজল (২৪) গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতের শ্রীঘরে অবস্থান করছেন।
ধর্ষক সজল উপজেলার কৃর্তীপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে। ধর্ষিতা নিজেই বাদি হয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। থানার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদি নতুনহাট পাবলিক কলেজ ও তার স্বামী শহীদ মশিয়ুর রহমান ডিগ্রী কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।
বাদি ও তার স্বামীর বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে হওয়ায় প্রেমজ সম্পর্কের মাধ্যমে গত ১লা আগষ্ট ২০২৪ইং তারিখ তারা উভয়েই নিজেদের ইচ্ছায় বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়, যশোর হতে ১ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বাদী ও তার স্বামী দুজনেই শিক্ষার্থী হওয়ায় তারা তাদের পরিবারের কাউকে বিবাহের বিষয়টি জানাননি। বাদীর পিতার সহিত বাদীর মাতার বনিবনা না হওয়ায় ১২-১৩ বছর পূর্বে বাদীর মাতা কীর্তিপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
বাদী তার পিতার সাথে ফুলবাড়ী গ্রামে থাকে এবং মাঝেমধ্যে তার মায়ের বাড়িতে আসেন। বাদীর বিবাহের বিষয়ে শুধুমাত্র তার মাকে অবগত করেন এবং বাদি তার মায়ের বাড়িতে স্বামীর সাথে মাঝেমধ্যে সময় কাটাতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১১টার সময় বাদীর স্বামী বাদীর মায়ের বাড়ি কীর্তিপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে আসলে উক্ত এলাকার জনৈক আব্দুল মান্নানের তিন কক্ষ বিশিষ্ট বিল্ডিং বাড়ির সামনে গজ ঘরে অবস্থান করে অনুমান দেড় ঘন্টা পর বাদীর স্বামী তার শ্রীরামপুর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে গেলে বাদী দরজা দিয়ে উক্ত রুমে অবস্থান করছিল।
এমতাবস্থায় ১০-০৯-২০২৪ইং তারিখ রাত আনুমানিক ৪টা ২১মিনিটের সময় একটি মোবাইল নাম্বার হইতে উপরোক্ত আসামী তার পরিচয় দিয়ে বাদীকে বলে তোমার স্বামীকে আমি আটকে রেখেছি। তোমার স্বামীর সাথে তোলা তোমার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি এখন আমার কাছে, জরুরী কথা আছে দ্রুত ঘর হতে বাইরে আসো। বাদী কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে রাত অনুমান সাড়ে ৪টা দিকে ঘরের দরজা খোলার সাথে সাথেই উক্ত আসামী বাদীর ঘরে প্রবেশ করে।
বাদী ভয় পেয়ে ডাক চিৎকার করতে গেলে আসামি বাদীর মুখ আটকিয়ে ধরে জোরপূর্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাদীর পরনের স্যালোয়ার খুলে ধর্ষণ করে এবং পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানালে বাদীর বিবাহের খবর সহ বাদির স্বামীর ক্ষতি করবে বলে হুমকি প্রদান করে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়। বাদী বিষয়টি সকালে তার মাতা ও স্বামীকে অব্যাহতি করে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) ও তদন্ত পরিদর্শক ইব্রাহীম আলী বলেন, শিক্ষার্থীকে ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণের ঘটনায় ২০০০সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় একটি এজাহার হয়েছে। এজাহারের উপর ভিত্তি করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসামীকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা নং ০৬, তারিখ-১১-০৯-২০২৪ইং।