রবিন চৌধুরী রাসেল রংপুর জেলা প্রতিনিধি
রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের প্রায় সাড়ে চার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে চরবাসীর।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, ভারতে অতি ভারী বৃষ্টিসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাতে বৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। বেলা ৩টায় এ পয়েন্টে পানি ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এদিকে উজানের ঢল তীব্র হওয়ায় তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে হু হু করে পানি ঢুকে পড়েছে রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলায়। এর মধ্যে গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লক্ষীটারী, গজঘন্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়ন, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, টেপামধুপুর ইউনিয়ন এবং পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর, দ্বীপচরের প্রায় ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া এসব এলাকার আগাম আমন ধান, বাদাম, মরিচের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ গবাদিপশু-পাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চরের মানুষ।
গঙ্গাচড়া উপজেলার চর শংকরদহের জাহানারা বেগম বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে নদীত পানি বাড়াতে হামার ঘরে পানি উঠছে। যাওয়ার তো কোনোটে জায়গা নাই। বাড়ির সউগ কিছু চকি তুলছি। পানি তাও বাড়তোছে। ক্ষেতের ধানের শীষ আসছিল। সেই ধানগুলোও নদীত ভাসি গেইল। এ্যালা সারা বছর হামরা কি খায়া থাকমো সেই চিন্তা করতোছি।’
কাউনিয়া উপজেলার জামিল মিয়া বলেন, ‘ক্ষ্যাতের ধান, বাদাম, পুকুরের মাছ সউগ নদী চলি গেইছে। বাড়িতও পানি উঠছে। কখন যে নদীর পানিত ঘরবাড়ি ভাসি যায়। হামরা ম্যালা আতঙ্কে আছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী রংপুর বিভাগ ও এর উজান ভারতে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিনে তা হ্রাস পেতে পারে।’