সেলিম চৌধুরী, জেলা প্রতিনিধি, রংপুর
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার চড় বিনবিনা গ্রামে ব্যাংকের ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে ফাঁদে ফেলে মুক্তিযোদ্ধার পুত্রবধুসহ স্থানীয় ৬ জনের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি প্রতারক চক্রের নামে। মামলাসূত্রে ও সরেজমিনে জানা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ১১ ও ১২ তারিখে একটি প্রতারক চক্রের মূলহোতা লালমনিরহাটের সাপ্টিবাড়ী গ্রামের মৃত জহুরুল ইসলামের ছেলে তানভীর ইসলাম মামুন, তানভীর ইসলামের স্ত্রী ফেন্সী বেগম, রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার বিনবিনা গ্রামের তালেপ মিয়ার ছেলে রজমান আলী, ছামাদ মিয়ার ছেলে খলিল মিয়া, সৈরত আলীর ছেলে তালেপ মিয়া, রমজান আলীর স্ত্রী মিনা বেগম, কাকিনা লালমনিরহাটের হারুন বানিয়ার ছেলে বাবলু মিয়াগং গঙ্গাচড়া বিনবিনা গ্রামের মেসার্স লায়লা বেষ্ট প্লাস ট্রেডার্স এর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো: মেহেদী হাসান রাজমনির নিকট থেকে ৬,৯৩,০০০/- ও তার গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি মেসার্স লিমান ডেইরী এন্ড এগ্রো’র আব্দুর রশিদ মিয়ার ছেলে রুহুল আমিন’র নিকট ৫,৭৮,০০০/- , মেসার্স মিনহা ডেইরী এন্ড এগ্রো’র আতিয়ার রহমান এর নিকট হতে ৭,৭৫,০০০/- , শফিকুর রহমান এর নিকট হতে ২১১ মন ভূট্টা যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩,০০,০০০/-, আতিকুল ইসলাম এর নিকট হতে ৪,০০,০০০/- টাকা , লালমনির হাটের আদিতমারীর আব্দুল আজিজ এর নিকট হতে ৪,৫০,০০০/- টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন।
তানভীর ইসলাম মামুন ওরফে জন্স মামুন লালমনিরহাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন এলাকায় পরিচয় ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। গংগাচড়া উপজেলার বিনবিনার চড়ে সাধারণ মানুষকে লালমনিরহাট সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে সি সি ঋন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে উক্ত টাকাগুলো ভুক্তভোগীর হিসাব নম্বরে জমা করতে বলে। হিসাবে লেনদেন না করিলে ঋন পাওয়া যাবে না। ভুক্তভোগীরা ঋন পাওয়ার আশায় তাদের হিসাব নম্বরে টাকা জমা করেন। কিছুদিন পর ঋন মঞ্জুরের কথা বলে তাদের কাছ থেকে ০৪ টি ব্যাংক চেক ও ফাঁকা নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়।
উক্ত চেক দ্বারা রমজান, খলিল, তালেপ, ফেন্সি টাকা উত্তোলন করে বাড়ী থেকে পালিয়ে যায়। বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে এই প্রতারক চক্র রমজান আলী, খলিল মিয়া তাদের নিকটতম আত্মীয় বিদেশে থাকার কারনে দেশ ছেড়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ঘটনার সংগে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ লালমনির হাটে সোনালী ব্যাংক শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এ কারণে এই সংঘবদ্ধ চক্রটি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতারকদের অপকর্ম জানাজানি হলে ভুক্তভোগীগন চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত চাইলে তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকী প্রদান করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর স্ত্রী মিতু বলেন আমাদের একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের ব্যাপারে লালমনির হাট শাখার ব্যাংক ম্যানেজার জড়িত আছে। না হলে কি করে এত টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেলো তারা আমাদেরকে জানানোর প্রয়োজনবোধ করলো না। টাকা উত্তোলন করার ব্যপারে লালমনিরহাটের সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গঙ্গাচড়া আমলী আদালতে ০৩ টি মামলা আনায়ন করেন। মামলা গুলো রংপুরে পিবিআইতে তদন্তাধীন অবস্থায় আছে।