টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে আমন ধান কাটা নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন চাষীরা। অক্টোবরে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে ধনবাড়ী উপজেলার কিছু কিছু গ্রামে আমন ধান ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয় । পচন্ড শিলাবৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ায় ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ে । কিছু কিছু ধান ক্ষেতের ধান গাছ মাটিতে লেপ্টে যায় । আবার কোথাও কোথাও ধান গাছ জমিতে পানির মধ্যে হেলে পড়ে ।
এই সব ধান মেশিন দিয়ে কাটা সম্ভব হচ্ছে না। মাত্রাতিরিক্ত মুজুরি দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। কাদা পানিতে লেপ্টে থাকা ধান কাটতে যেমন কষ্ট হচ্ছে তেমনি সময়ও লাগছে । কাঁদাপানিতে পড়ে যাওয়া ধানের মানও ভালো না এবং ফলনও কম হয়েছে । তাই সেই সব ধান বিক্রি করতে গেলেও উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছে না চাষীরা ।
এই অবস্থায় ধান কেটে হিসাব মিলাতে পারছে না চাষীরা । এদিকে বোরো ধান চাষের সময় ঘনিয়ে আসছে । তাই জমিতে প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ধান কেটে ক্ষেত পরিষ্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আবার এখন ধান না কাটলে অবশিষ্ট ধান গুলো গরু ছাগল হাঁস মুরগির অত্যাচারে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে যেহেতু আশেপাশের জমিতে ধান কাটা শেষ । তাই বাধ্য হয়ে শেষ মুহূর্তে চাষীদের তড়িঘড়ি করে বেশি মুজুরি দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। যাদের কৃষি মুজুর নেওয়ার সামর্থ্য নেই তারা নিজেরাই পরিবারের সব সদস্য মিলে কাদা পানির মধ্যে ধান কেটে যাচ্ছেন । এবারের শিলাবৃষ্টিতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি,পাইস্কা ও বলিভদ্র ইউনিয়নের গ্রাম গুলোতে।পাশাপাশি ধনবাড়ী পৌরসভার চালাষ ,বান্দ্রা,চরভাতকুড়া ,সিংগাআটা ,রুপশান্তি ,আমনগ্রাম,কয়া পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মুশুদ্দীর ধান চাষী হিরা প্রামাণিক জানান,’ যেখানে আমন ধান বিঘা প্রতি পনের ষোল মণ হয় সেখানে এবার শিলাবৃষ্টিতে ধান গাছ শুয়ে পড়ার জন্য আট দশ মণের মতো ফলন পেয়েছি’ । ধনবাড়ী পৌরসভার বর্নিচন্দ্রবাড়ির ধান চাষী মো: জয়েন উদ্দিন বলেন,’ এবার আমন ধান চাষ করে খরচ উঠানো কঠিন হয়ে গেছে । শিলাবৃষ্টিতে ধান গাছ কাঁদাপানিতে শুয়ে পড়েছে। এখন বেশি টাকায় মুজুর দিয়ে কাটতে হচ্ছে। গরু আছে তাই ধান চাষ না করলে চলে না’ ।