ঢাকাবুধবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. অভিযোগ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন বিচার
  5. আওয়ামী লীগ
  6. আগুন
  7. আটক
  8. আন্তর্জাতিক
  9. আবহাওয়া
  10. আমাদের পরিবার
  11. আরো
  12. আলোচনা সভা
  13. ইতিহাস ও ঐতিহাসিক
  14. ইসলাম
  15. ইসলামী জীবন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিলুপ্তির পথে যশোরের যশ খেজুরের রস

50
admin
ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩ ৬:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জহিরুল ইসলাম ঝিকরগাছা সংবাদদাতা
বৈচিত্রপূর্ন ছয়টি ঋতুর দেশ আমাদের সোনার বাংলাদেশ। শরৎ ঋতুকে বিদায় জানিয়ে হেমন্তকে বরণ করে নেয় প্রকৃতি। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একটি বৈশিষ্ট্য। ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে কুয়াশা জানান দিয়েছে শীতের আগমনী বার্তা।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গ্রামে গ্রামে খেজুর রস সংগ্রের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। কাক ডাকা ভোরে রস সংগ্রহ ও সন্ধায় চলছে গাছ পরিচর্যার কার্যক্রম। এবার কিছুটা আগেই গ্রামে গ্রামে সকালের শিশিরের সঙ্গে অনুভূত হচ্ছে মৃদু শীত।
আর মাত্র কয়েক দিন পর রস সংগ্রহ করে রস থেকে নালি গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রের প্রস্তুতি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে চোখে পড়ছে।
খেজুর রস ও গুড়ের জন্য যশোর জেলা বিখ্যাত। সুঘ্রান নলের গুড় জেলার  প্রতিটি উপজেলায় পাওয়া যায়। যা আবার জেলার চাহিদা পুরন করে সারা দেশে রপ্তানি করা হয়ে থাকে। তার পরও যে রস ,গুড় ও পাটালী তৈরি হয় তা দিয়ে শীত মৌসুমে রীতিমত কাড়াকাড়ি শুরু হয়। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড়।
কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার ক্ষেতের আইলে, রাস্তার দুই ধারে ও ঝোপ-ঝাড়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। কোন পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুর গাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। কিন্তু মানুষের সচেতনতা ও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ আর তেমন চোখে পড়ে না।
অপরদিকে ইট ভাটার রাহু গ্রাসে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারনে যে পরিমান গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনের পর দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমেই যাচ্ছে। এখনও শীতকালে মানুষ শহর থেকে দলে দলে ছুটে আসে গ্রামে, বাংলার খেজুর রস ও গুড়ের স্বাদ নিতে। আগের দিনে সন্ধ্যার সময়ে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠতো। রস জ্বালিয়ে পাতলা ঝোল, দানা গুড় ও পাটালী তৈরি করতেন। যার স্বাদ ও ঘ্রাণ ছিল সম্পূর্ন ভিন্ন। নতুন প্রজন্মের কাছে তা এখন রুপকথার মতো মনে হতে পারে,  কিন্তু তা বাস্তব।
যত বেশি শীত পড়বে ততবেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। এক একটি খেজুর গাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত রস দিয়ে থাকে। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা। কিন্তুু জলবায়ু পরিবর্তন, কালের বির্বতনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার টাওরা গ্রামের গাছি মোঃ ছিদ্দিক মোড়ল বলেন, এবছর একটু আগে ভাগেই গাছ ঝোড়া বা কাটা শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই রস সংগ্রহের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। তারা আরও বলেন ভাটার কারনে অনেক খেজুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এখন তেমন একটা বেশি খেজুর গাছ না থাকায় গাছিরাও খেজুর রস সংগ্রহের জন্য তেমন আগ্রহ দেখান না।
আগে এক ভাঁড় রস বিক্রি হতো ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায়,  যা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।  এক কেজি গুড় বিক্রি হতো ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়,  আগে এক কেজি পাটালি বিক্রি হতো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি।

বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য আর অপেক্ষার পালা। এ জন্য শীত মৌসুম আসার সাথে সাথে গাছিদের কদর বেড়ে যায়।

এই সাইটে নিজম্ব খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকে। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।