মোঃ খান সোহেল নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনায় ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক-শ্রমিকদের বিক্ষোভ
নেত্রকোনায় ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক-শ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নেত্রকোনায় ট্রাফিক পুলিশের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক-শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নেত্রকোনা পৌরসভার সামনের সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
এর জেরে ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে জেলা পুলিশ। অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন নেত্রকোনা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মৃদুল রঞ্জন দাস ও টিএসআই আকবর হোসেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তা প্রত্যাহার ও তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিক।
এদিকে বিক্ষোভের সময় পুরো শহরের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। যাত্রীসাধারণসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এতে দুর্ভোগে পড়ে।
পরে পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিক বিক্ষোভস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের দাবি মেনে প্রত্যাহার ও তদন্ত কমিটির ঘোষণা দেন। বেলা পৌনে ১টার দিকে শ্রমিকেরা তাঁদের অবরোধ তুলে নেন।
নেত্রকোনা অটোটেম্পো ও সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের সিএনজিচালকেরা রাস্তায় বের হলেই মামলা ও তাদের চাঁদার জন্য নানাভাবে হয়রানি করে ট্রাফিক পুলিশ। চাঁদা না দিলেই শ্রমিকদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করতেন ট্রাফিক পরিদর্শক মৃদুল ও টিএসআই আকবর। এটি আমরা বারবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও কোনো সুরাহা পাইনি। ট্রাফিকের নির্যাতন দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিল, তাই আমরা আজকে তাঁদের প্রত্যাহারের জন্য রাস্তায় নেমেছি।
অভিযুক্ত ট্রাফিক পরিদর্শক মৃদুল রঞ্জন দাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি।
নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিক বলেন, ‘আমরা শ্রমিক অসন্তোষের খবর শুনে অবরোধস্থলে যাই।
গতকাল শ্রমিকদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। এ নিয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আজকে শ্রমিকেরা হঠাৎ সকালে ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারসহ তদন্ত কমটি গঠনের ঘোষণা দিই। পরে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।
এদিকে, গতকাল সোমবার নেত্রকোনা জেলা শহরের কুড়পার এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের এসআই আকবরের সঙ্গে সিএনজির ড্রাইভারদের মধ্যে চাঁদা আদায় নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনা হয়। এতে তিনজন সিএনজিচালক ও ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা আকবর হোসেন আহত হন।
এ ঘটনায় পুলিশ মামলা দায়ের করলে মামলা প্রত্যাহার ও সড়কে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।