মোঃ নাসির উদ্দিন,গলাচিপা (পটুয়াখালী)
পটুয়াখালীর গলাচিপায় মেয়ে হত্যার বিচার চাওয়ায় মা-বাবাকে প্রাননাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছোট শিবা গ্রামে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) প্রতিবেদকের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমনই অভিযোগ করেন ধর্ষণের স্বীকার হয়ে নিহত হওয়া স্বপ্না আক্তারের (১২) বাবা মো. বাবুল ফকির। স্বপ্না আক্তার হত্যায় মো. রেজাউল সরদারকে আসামী করে মামলা করায় আসামীর আত্মীয় স্বজন ও তার দলের লোকেরা স্বপ্না আক্তারের বাবা-মাকে হত্যার হুমকি দেয়। মামলা সূত্রে ও নিহত স্বপ্না আক্তারের বাবা মো. বাবুল ফকির (৩৫) জানান, আমার মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।
আমার মেয়ে আমার চাচী আয়শা বিবির সাথে রেজাউল সরদারের জমিতে বিকাল বেলা শাক তুলতে গেলে আমার চাচী শাক তুলে বাসায় ফেরে। কিন্তু আমার মেয়ে আরও শাক তুলতে থাকলে রেজাউল সরদার আমার মেয়েকে একা পেয়ে তার বুকে পিঠে লাথি মারে। এতে আমার মেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে রেজাউল সরদার আমার মেয়েকে তার জমির পশ্চিম পাশে বড় খালের পাড়ে নির্জন এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে। পরে আমার মেয়েকে খালের পানিতে কচুরীপানা দিয়ে চাপা দিয়ে রাখে। পরে পুলিশ কচুরীপানা থেকে আমার মেয়েকে মৃত উদ্ধার করে।
আমার মেয়েকে হত্যা করায় রেজাউল সরদার কে আসামী করে গলাচিপা থানায় একটি এজাহার দায়ের করি। যার মামলা নং- ১২, তারিখ- ১৬/০১/২০২৩। গলাচিপা থানা পুলিশ রেজাউল সরদারকে আটক করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। রেজাউল সরদার জেলে থাকলেও তার আত্মীয় স্বজন ও দলের লোকজন আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এদিকে রেজাউল সরদারকে জেল থেকে জামিনে ছাড়িয়ে আনার জন্য তার আত্মীয় স্বজনরা বিভিন্ন তদবীর চালিয়ে যাচ্ছে।
আর আমি মামলা তুলে না নিলে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে মেরে ফেলার হুমকি প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া রেজাউল সরদার জামিনে মুক্তি পেলে আমি বিচারতো পাবোই না বরং আমরাও ভয়ে আতংকে আছি। তারা বলে “মামলা মোকদ্দমা করলে কিছু হয় না। তোর মেয়েকে মেরেছি। এখন তোদের পালা।
আমি অটো রিকসা চালাই। গরিব মানুষ বলে মেয়ে হত্যার বিচার কি পাব না। আমরা ঠিকমত বাড়িতে থাকতে পারি না। না জানি কোন সময় রেজাউল সরদারের লোকজন আমাদের উপর হামলা করে। একদিকে মেয়েকে হারিয়েছি অন্যদিকে আমরা প্রানের ভয়ে আছি।
আমি আমার মেয়েটাকে খুব ভালবাসতাম। কিন্তু আমার মেয়েটাকে রেজাউল সরদার মেরে ফেলল। এই কথা বলে বাবুল ফকির কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক সহ সকলের কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার রেজাউল সরদারের ফাঁসি দাবী করছি। যাতে করে আর কেউ এভাবে কোন মেয়েকে ধর্ষণ বা হত্যা করার সাহস না পায়।