নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সংবাদ সম্মেলন করেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন। ছবি: আজকের পত্রিকা নেত্রকোনার কলমাকান্দায় উপজেলা নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জয়ী করতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মোশতাক আহমেদ রুহীর বিরুদ্ধে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন এ অভিযোগ করেছেন। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তোলেন তিনি। কলমাকান্দা উপজেলা মোড়ে একটি কফি হাউসে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় ও জেলার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন অভিযোগ করে বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপিরা স্থানীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। আইনে সুস্পষ্টভাবে এসব বলা থাকলেও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না তিনি। এমপি রুহী তাঁর পছন্দের প্রার্থী দোয়াত কলমের প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছকে জয়ী করতে প্রকাশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইন লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘এমপি রুহী আমার পক্ষে কাজ করা অসংখ্য মানুষকে মোবাইল ফোনে কল করে প্রতিনিয়ত হুমকি–ধমকি দিচ্ছেন।
যেখানে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত অবাধ নিরপেক্ষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ, সেখানে এমপি রুহী শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে এই নির্বাচনকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।’ প্রার্থী মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগ, ইতিমধ্যে উপজেলার প্রায় ২০০ শিক্ষক-কর্মচারীকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়ে পাশের উপজেলা থেকে শিক্ষক-কর্মচারী সমন্বয় করা হয়েছে। এ বিষয়টিও সন্দেহজনক।
এ ছাড়া এমপির পছন্দের প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছের লোকজন বলা বলি করছে-‘‘আমার এমপির লোক, ভোট মানুষ যেখানেই দিক না কেন ফলাফল আমাদের পক্ষেই ঘোষণা করা হবে। এমপি সাহেব ওনার পছন্দমতো সব কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন, কাজেই চেয়ারম্যান আমরাই হব।’ ’ ’ এই প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘একদিকে এমপির সরাসরি হস্তক্ষেপ অন্যদিকে ওনার অনুগত লোকজন আগাম ফলাফল ঘোষণার ফলে জনমনে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া এমপি রুহীর তাঁর ছেলেসহ হাট বাজারে প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে-‘‘মোস্তাফিজুর রহমান চয়নকে প্রতিহত করতে হবে।’
এসব বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কান্দাপাড়া বাজারে গণসংযোগকালে আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালায় এমপির অনুগত লোকজন। এতে আমিসহ ৮-১০ জন কর্মী আহত হয়। পরে এই ঘটনা ঢাকতে মিথ্যা অভিযোগে আমার ৩১ জন কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।’ এমপির সরাসরি পক্ষপাতের কারণে কলমাকান্দায় সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মোশতাক আহমেদ রুহীর মোবাইল ফোনে কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে এমপি মোশতাক আহমেদ রুহীর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চয়ন।
এতে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণসহ তাঁকে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকিসহ নানা অভিযোগ করা হয়। এই উপজেলায় প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলায় মোট ৭ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিন্দ্বন্দ্বীতা করছেন।