মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও
বক্ষব্যাধি ক্লিনিক সেবা দেয়ার জন্য করা হলেও মিলছে না কাঙ্খিত সেবা। আর যতটুকু সেবা দেওয়া হয় তাতে রয়েছে নানাবিধ ভোগান্তি। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্লিনিকের প্রবেশপথে নেই কোন তদারকি বা দায়িত্বরত ব্যক্তি।
যে যার মত করে পারছেন ভেতরে প্রবেশ করছেন। এমনকি ভেতরে প্রবেশে বাদ পড়ছে না গরু-ছাগল। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দেওয়া হয় সেবা। টিউবারকুলোসিস বা টিবি রোগে আক্রান্ত রোগী ছাড়াও রয়েছেন জ্বর, সর্দি, ব্যথাজনিত রোগী। ক্লিনিকে কফ ও টিবি পরীক্ষার করার জন্যে জিন এক্সপার্ট মেশিন থাকলেও নেই কোন ধরনের প্যাথলোজিক্যাল কোন পরীক্ষার ব্যবস্থা।
ক্লিনিকে থাকা এক্সরে মেশিনটি অচল হবার ফলে এক্সরে করতে গিয়ে দূরের কোন প্রতিষ্ঠানে। এতে রোগির ভোগান্তি হবার পাশাপাশি করতে হয় বাড়তি খরচ। আর বক্ষব্যাধি কনসালটেন্ট চিকিৎসক সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও দেন সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের দেওয়া তথ্যমতে, ক্লিনিকে ২১ টি পদের ভেতরে শূণ্য রয়েছে ৪টি পদ।
তবে চিকিৎসা সেবা প্রদানে একজন বক্ষব্যাধি কনসালটেন্ট ও একজন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন একজন সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ক্লিনিক থেকে টিবি রোগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮ জন রোগী। বক্ষব্যাধীসহ, বিভিন্ন ধরনের সাধারণ রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩২৬১ জন রোগী।
চিকিৎসা নিতে আসা আমেনা বেগম বলেন, সরকারি জায়গায় আসা হয় কম টাকায় চিকিৎসা নেওয়ার জন্য।
এখানে কফ পরীক্ষা করে আবার বুকের এক্স-রে আলাদা জায়গায় করতে যেতে হয়। সরকারপাড়ার ব্র্যাক অফিস রিক্সায় যেতে-আসতে একজনের ৬০ টাকা খরচ হয়। গরীব মানুষ এত বেশি টাকা তো আমাদের নাই। যদি এখানে পুরো সেবাটা দেওয়া হয় তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
বক্ষব্যাধি ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা শুভেন্দু কুমার বলেন, ক্লিনিকটিতে প্রধানত যক্ষ্মারোগী শনাক্ত ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। এ রোগ শনাক্ত করার জন্য এক্স-রে মেশিনের প্রয়োজন হয়। তবে সেই এক্স-রে মেশিনটি প্রায় ১৫ বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে।
এ কারণে রোগীদের বাইরে গিয়ে করাতে হয়। আর বক্ষব্যাধি রোগী ছাড়াও এখানে অনেক সাধারণ রোগী আসেন যাদেরকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। আমাদের কোন ধরনের নৈশ্য প্রহরি বা গার্ড না থাকবার কারণে সব সময় অরক্ষিত হয়ে থাকে। আমরা কয়েক দফায় সমস্যা গুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করা যায়, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এসব সমাধান হবে।
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জনের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইফতেখায়রুল সজীব বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে বলে আসতেছি।
আপাদত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের একজন চিকিৎসক সেখানে সেবা প্রদান করছেন। আর ক্লিনিকে নৈশ্য প্রহরীর কোন পদ না থাকায় লোকবল দেওয়া হয়নি। এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হয়ে রয়েছে। আমরা নতুন মেশিন নেওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করছি স্বল্প সময়ের মধ্যে এটির সমাধান হবে।
এ ছাড়াও ২৯ শতক জমি বেদখলে রয়েছে। সেটি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। খুব দ্রুত সমস্যা গুলোর সমাধান হবে।