নিজস্ব সংবাদদাতা:
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ২ নং গোলখালী ইউনিয়নের এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফিকুর রহমানের সাথে বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ২২নং দক্ষিণ সোনাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জরিয়ে পরার কথা এলাকায় রিতীমত তোল পাড় সৃষ্টি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এনিয়ে শিক্ষকদের মাঝে আলোচনা ও সমালোচনা ঝড় বইছে। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সরব রয়েছে বিষয়টি নিয়ে। এতে করে শিক্ষকদের এই মহান পেশায় মানুষদের সম্মান হানীর পাশাপাশি পেশা’কে নিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের কটুক্তি। প্রশ্ন উঠছে জনমনে, যারা সমাজের সাধারণ মানুষদের আলোর পথ দেখান,সেখানে সমাজের সেইসব মানুষের এমন কাজে রীতিমত অপমানের পাত্র হতে হচ্ছে শিক্ষক সমাজ।
খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, একজন গোলখালী এলেমাবাদ দাখিল মাদ্রাসার সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন, আর অপরজন সোনাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন।
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে গেলে জানা গেছে গত ১৯৯৫ সালে ১০ই জুন মুজাম্মেল হক বিশ্বাসের সাথে শিউলি আক্তার এর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এর পর ১৯৯৬ সালে ২৯ অক্টোবর এই দম্পত্তির সংসারে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এবং কন্যা সন্তানটির নাম রাখা হয় ফারওয়া বিশ্বাস মিশু। ভুক্তভোগী মুজাম্মেল বিশ্বাস ২০০০ সালে কর্মক্ষেত্রে পাড়ি জমায় সৌদি আরবে। এরই মধ্যে ২০০৩ সালে স্ত্রী শিউলি আক্তারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি হয়, কিছুদিন যেতে না যেতেই মুজাম্মেল বিশ্বাস খবর পায় তার স্ত্রী শিউলি আক্তার মাওলানা শফিকুর রহমানের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত, মাওলানা শফিকুর রহমানের বাড়ি এবং শিউলি আক্তারের শশুর বাড়ি একই এলাকায় পাশাপাশি বাড়ি।মোজাম্মেল৷ হক বিশ্বাস এসব খবর পেয়ে ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসেন, শুরু হয় দাম্পত্য জীবনের কোলাহল, পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে চলতে থাকে নিয়মিত ঝগড়া বিভেদ, এরই মধ্যে দেখতে দেখতে কন্যা মিশুর বয়স বেড়ে দাড়ায় ১৭ বছরে। ২০১৪ সালে ২১ মার্চ শুক্রবার মিশু তার নিজ ঘরে রহস্য জনক ভাবে মৃত্যু বরন করেন, তখন মিশু এইচ এসসি পরিক্ষার্থী ছিলেন। মিশু মারা যাওয়ার ঘটনায় প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়, পরে মিশুর পিতা মোজাম্মেল হক বিশ্বাস গত ১২ জুন ২০১৪ ইং তারিখ আমতলী কোর্টে মিশুর মা শিউলি আক্তার’কে ১ নাম্বার আসামী এবং প্রেমিক মওলানা শফিকুর রহমান কে ৩ নং আসামি করা হয়। মোট ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং সিআর 61/ 2014 ইং।
মিশুর পিতা মোজাম্মেল হক বিশ্বাস বলেন, আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার ও মাওলানা শফিকুর রহমান দীর্ঘদিন যাবত পরকীয়া প্রেম করে আসছে, এবং আমার হাতে কয়েকবার ধরাও পড়েছে, এনিয়ে এলাকায় একাধিক বার সালিশ ব্যবস্থা হয়েছে।আমার মেয়ে মিশু তার মায়ের পরকীয়া প্রেম সম্পর্কে জানতে পারে। এজন্য আমার মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে এই পরকীয়া প্রেমিক যুগল। কন্যার বাবা আরো বলেন,এ ঘটনার প্রক্ষিতে প্রথমে মামলা করেছি, মামলা করার পড়ে আমাকে এই প্রেমিক যুগল বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি ছাড়াও মারধর পর্যন্ত করতো।মানসিক নির্যাতনসহ বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন আমতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জি এম দেলোয়ার হোসেন, আমতলী পৌরসভার সাবেক মেয়র মতিউর রহমান ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধা আমাকে জোরপূর্বক মামলা তুলে নিতে বাধ্য করে এবং আমাকে ৭৫ শতাংশ জমি দিয়ে মামলাটি মিমাংসা করে দেয়। এতোকিছু হওয়ার পরেও আমার স্ত্রী শিউলি ও মাদ্রাসার সুপার মাওলানা শফিকুর রহমান নিয়মিত পরকীয়া প্রেম চালিয়ে যায়,। তিনি আরো বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে তারা দুজনে আমার বসতবাড়ীতে হাতে নাতে ধরা পরেছে এবং এই জঘন্য কাজের জন্য আমি সহ এলাকাবাসী মাওলানা সহ দুজনকে উত্তম মধ্যম প্রহর করে, যার ফলে আমি এবিষয়ে নিয়ে সুষ্ঠু সমাধানের দাবিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইং তারিখ আমার স্ত্রী শিউলি আক্তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও মাওলানা শফিকুর রহমান মাদ্রাসার সুপার এদের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে গলাচিপা অবস্থিত সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প কমান্ডার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন,
এ বিষয় শিউলি আক্তার এর মুঠো ফোনে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি, এবং সাক্ষাতে দেখা করে কথা বলার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে এবিষয়ে মাওলানা শফিকুর রহমান বলেন, আমাকে এর আগে দুটো মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, আবার অদৃশ্য কারনে তিনিই মামলাটি তুলে এনেছে, তাছাড়া আমার সাথে মোজাম্মেল বিশ্বাসের দির্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে, এজন্য আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, প্রবাসে থাকাকালীন কষ্টের অর্জিত টাকা দিয়ে দেশে নিজ এলাকায় জমি ক্রয় করেছি। বিবাদী গন আমাকে বিভিন্ন ভাবে খুন জখমের হুমকি ধামকি দেয় এবং আমার সাথে সম্পর্ক রাখবে না বলে জানিয়ে দেয় প্রকাশ থাকে যে, ৪২০, ৪২৬,২২৮ খতিয়ানের দাগ নং ১৫১৭, ১৫১৮, ১৫৭৬,১৮৫৫ আর দাগ আছে। মোট জমি ২ একর ৫৮ শতাংশ ২৬ নং দক্ষিন রাওগা মৌজা ওয়ার্ড নং- ১ আমতলী বরগুনা। ৩ ও ৪ নং বিবাদী জোরপূর্বক দখল করে নয়এমতাবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে মামলার প্রকৃয়ায় আসছি বলে জানান।
সার্বিক বিষয় আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আজম বলেন, এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, এখানে আমি কি করবো। এভাবে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে এরিয়ে যান তিনি।
সর্বশেষ মুঠোফোনে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো,আসাদ ঘটনার বরাত দিয়ে জানান,স্বামী স্ত্রীর ব্যপারে একটা অভিযোগ হাতে পেয়েছি এস,আই সাথে কথা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে হলে জানান তিনি।