অবিশ্বাস্য লৌহ মর্ষক ঘটনার বিবরণ দিচ্ছে নিজ স্ত্রী ও উজ্জলের আপন ছোট ভাই ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও ঘটনার সাথে জড়িত তিন জনকে আটকের খবর জানান পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি)।
দেশে আসার ৯দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় উজ্জ্বল। ঘটনার ১৮দিন পর তার অর্ধ গলিত লাশ ধলেশ্বরী নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত উজ্জ্বল সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের উত্তর কাংশা গ্রামের রোকমান মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় আটক তার স্ত্রী কাঞ্চন ওরফে মনিরা (২৩) নিহতের ছোট ভাই মো. ঝন্টু (২৪) এবং তার বন্ধু মাসুদ (২২)। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি হালকা গোলাপী রংয়ের ওড়না , একটি হালকা বেগুনী রংয়ের প্রিন্টের সুতি ওড়না, একগোছা নাইলনের চিকন রশি, একটি চায়ের কাপ, বাংলাদেশী নগদ ৮ হাজার ৫শত-টাকা, একটি হাসুয়া, একটি গামছা উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা।
ঘটনার বর্ণনা জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, প্রবাসী উজ্জ্বল বিদেশ থাকার সময় তার ছোট ভাই মো. ঝন্টুর সাথে তার স্ত্রী মোছা. কাঞ্চনের (মনিরা) সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এর মাঝে বড় ভাই দেশে ফিরে এলে সম্পর্কে বাধ সাধে। দেশে আসার ৯দিনের মাথায় গত মাসের (অক্টোবর) ১২ তারিখ রাতে পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী দুধের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ব্যবহৃত গামছা দিয়ে হাত, পা বেঁধে ফেলে। এরপর দেবর ঝন্টুকে ডেকে আনলে ঝন্টু তার বন্ধু মাসুদকে ফোন করে বাড়িতে আসতে বলে।
এরপর গলায় গামছা পেঁচিয়ে স্ত্রী, ছোট ভাই এবং বন্ধু মাসুদ হত্যা নিশ্চিত করে এবং লাশ গুম করার জন্য বাঁশের সাথে বেঁধে ধলেশ্বরী নদীর পারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধারালো ছুরি দিয়ে লাশের বুক চিড়ে বড় ড্রামের সাথে বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়। যাতে করে লাশ ভেসে উঠতে না পারে।
আটককৃতদেরকে আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুল ওয়ারিশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) সুজন সরকার, সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান, সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।