শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এলজিইডি’র ‘রাস্তার কাজেই’ অনিয়ম-দুর্নীতি! সাতক্ষীরার শ্যামনগর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিভিন্ন মহলের লোকজন,তারা বলছেন, এলজিইডি’র তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের রাস্তা এবং ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে।
এতে করে নির্মাণকৃত রাস্তা ও ব্রিজ কালভার্ট অল্পদিনেই ধসে পড়ছে। এরফলে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এলজিইডির মাধ্যমে ঠিকাদাররা বিভিন্ন রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্টে অনিয়মে শতশত কোটি টাকা হরিলুট হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা যায় অনিয়ম আর দূর্নীতিতে সেরা অবস্থানে আছে শ্যামনগর এলজিইডি প্রকৌশলী কোনো কোনো রাস্তা কাজ শুরু হতে না হতেই মাটি খুঁড়ে বিল করিয়ে রাস্তা ফেলে উধাও,আবার কোনো রাস্তা মাঝামাঝি করে কাজ শেষ না করে কাজ ফেলে চলে যায়,আবার দেখা যায় নয় ছয় করে কাজ শেষ না হতেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্ত এসব বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে নারাজ শ্যামনগর উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার জানান, বন্যায় যে পরিমাণ ক্ষতি হয় তার অধিক বরাদ্দের চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বরাদ্দ এলে অর্ধেক কাজ করে বাকি টাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিধ্বস্ত কয়েকজন ঠিকাদার ভাগবাটোয়ারা করে নেন। শ্যামনগর কৈখালী ইউনিয়নের কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে শৈলখালী সন্নাসী রপ্তানের বাড়ি পর্যন্ত, কৈখালী বৈশখালী আবুল হোসেন মোল্লার বাড়ি হতে যাদবপুর বাজার পর্যন্ত, কৈখালী গঙ্গার মোড় হতে পরানপুর দিঘিরপাড় পর্যন্ত, কৈখালী মিন্দিনগর মগরেজ গাজীর বাড়ী হতে কালিন্দী রিভার পর্যন্ত,নুরনগর কুলতলি,নুরনগর হতে সোয়ালিয়া,মুন্সিগঞ্জে কলবাড়ী হতে নীলডুমুর বিজিবি ক্যাম্প,চুনকুড়ি নদীর পাড় হতে লুৎফর ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত, কৈখালী পূর্ব কৈখালী সাপখালী সাইফুল ডাঃ এর বাড়ি হতে সাংবাদিক আলফাত হোসেন এর বাড়ি পর্যন্ত, এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে এলজিইডি কতৃক কাজে বা তবে এর মধ্যে কোন কোন রাস্তা এবং ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এ বিষয়ে পুরো তথ্য দিতে নারাজ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঠিকাদার প্রতিবেদককে জানান, যে রাস্তা বা ব্রিজ ভালো সেগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে বরাদ্দ আনে এলজিইডি। এরপর বরাদ্দ এলে কোনো বিশ্বস্ত ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে কাজ না করেই সেই বরাদ্দের টাকা ভাগাভাগি করে নেয় কর্মকর্তা-কর্মচারি ও ঠিকাদার। এছাড়া অন্য কাজের ক্ষেত্রে ঠিকাদারদের কাছ থেকে সরকারি আয়কর-ভ্যাটের ১২ শতাংশ ছাড়াও চূড়ান্ত বিলের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় মোটা অংকের ঘুষ।
আর এটাকে ঠিকাদারদের ভাষায় বলা হয় অফিস পিসি। আর এই পিসি না দিলে কাজের বিল পেতে অনেকটা বেগ পেতে হয় ঠিকাদারদের। এ বিষয়ে শ্যামনগর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিবেদককে জানান, কোন কোন রাস্তা বা ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতি হয়েছে সেটির পুরোপুরি তথ্য তার কাছে বর্তমানে নেই। তবে কি কি কাজ করা হয়েছে সেই তথ্যগুলো আছে সেই তথ্য নিতে পারবেন। এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।